মোঃ আবুল কালাম:
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রী অপহরণের দীর্ঘ দেড় মাসেও উদ্ধার হয়নি। এ ঘটনায় কুমিল্লা কোতয়ালি থানায় জিডি, আদালতে মামলা ও লাকসাম থানায় জিডি করেও কোন প্রতিকার না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েছে বাদীর পরিবার। উপরন্তু মেয়েকে খুঁজতে এসে মারধরের শিকার হয়েছে ওই কলেজ ছাত্রীর স্বজনরা। অপরদিকে, আসামিরা জামিনে বেরিয়ে এসে উল্টো বাদীকে হত্যার হুমকি দিয়েছে। এতে আতংকিত হয়ে পড়েছেন কলেজ ছাত্রীর পরিবার। অপহৃতা দীপা রানী বণিক ফেনী পৌরসভার বাঁশপাড়া কোয়াটার এলাকার সৌদি প্রবাসী রবি বণিকের মেয়ে।
মামলা ও অপহৃতার পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত ১৯ আগস্ট বিকেলে দীপা রানী বনিক ওই কলেজের মৃনালিনী দত্ত ছাত্রী নিবাস থেকে প্রাইভেটের উদ্দেশ্যে বের হয়। এ সময় পূর্ব থেকে উৎ পেতে থাকা কথিত ডাক্তার অভিজিৎ মজুমদার অভিসহ অন্যান্যরা ওই ছাত্রীকে জোরপূর্বক অপরহণ করে। অভিযুক্ত অভিজিৎ লাকসাম উপজেলার বাকই দক্ষিণ ইউনিয়নের দেবিপুর গ্রামের সন্তোষ মজুমদারের ছেলে। ঘটনার পরদিন লাকসামের দেবিপুরে মেয়ের সন্ধানে গেলে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল আউয়ালের উপস্থিতিতেই কলেজ ছাত্রীর মা ঝুনু রানী বণিক, মামা পিযুষ বণিক, নানা সমির বণিক ও চাচা জয় বণিক লিটনকে মারধর করে স্বর্ণালংকার ও টাকা পয়সা ছিনিয়ে নেয় অভিযুক্ত অভির পরিবারের সদস্যরা। পরে অপহৃতা দীপা রানি বণিককে উদ্ধার এবং তার পরিবারের সদস্যদের মারধরের বিচার চেয়ে ২২ আগস্ট কলেজ ছাত্রীর চাচা জয় বনিক লিটন বাদী হয়ে অভিজিৎ মজুমদার অভি, তার পিতা সন্তোষ মজুমদার, ভাই রাজীব মজুমদার, সাজু মজুমদার, দীপংকর মজুমদার, একই গ্রামের গোপাল দেবনাথ, প্রদীপ দেবনাথ মানু, সুকদেব দেবনাথ, নারায়ণ মজুমদার ও বরইগাঁ গ্রামের মুনসুর দেওয়ানকে আসামি করে কুমিল্লা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা দায়ের করেন। অন্যদিকে, মেয়েকে উদ্ধারে কুমিল্লা কোতয়ালি মডেল থানায় একটি জিডিও করেন ওই কলেজ ছাত্রীর মা ঝুনু রানি বণিক।
এদিকে, মামলার প্রধান আসামি অভিজিতকে অদ্যাবধি গ্রেপ্তার কিংবা কলেজ ছাত্রী দীপাকে উদ্ধার করতে পারেনি আইন-শৃংখলা বাহিনী। অপরদিকে, মামলার বাকী ৯ আসামি জামিনে বেরিয়ে এসে মামলা তুলে নেয়াসহ বাদীকে হত্যার হুমকি দেয়। এ ঘটনায় মামলার বাদী জয় বণিক লিটন গত ২ অক্টোবর লাকসাম থানায় একটি জিডি করেন।
অভিযুক্ত অভিজিতের পিতা ও মামলার ২নং আসামি সন্তোষ মজুমদার বলেন, ঘটনার পর থেকে অভিজিতের সাথে আমাদের কোন যোগাযোগ নেই। মেয়ের আত্মীয়রা আমাদের বাড়িতে এসে উত্তেজিত হয়ে পড়লে কথা কাটাকাটি হয়।
এ বিষয়ে বাকই দক্ষিণ ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল জানান, আমার সামনে উভয় পক্ষের লোকজনের কথা কাটাকাটি হয়। ওই বাড়ি থেকে আমি চলে আসার পর মারামারি হওয়ার খবর শুনেছি।
কুমিল্লা কোতয়ালি মডেল থানার ওসি আনোয়ারুল হক জানান, জিডির প্রেক্ষিতে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি।
লাকসাম থানার ওসি মোঃ নিজাম উদ্দিন জানান, জিডির বিষয়টি আমরা আদালতকে অবহিত করেছি। আদালতের নিদের্শ মোতাবেক পরবর্তী আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।