স্টাফ রিপোর্টার:
রাজধানীসহ দেশের বাজারগুলোতে বেড়েই চলেছে পেঁয়াজের দাম। সঙ্গে বেড়েছে ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের দাম। আগের মতোই চড়া রয়েছে সবজি বাজার।
রাজধানীর বেশকিছু বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ টাকার মতো। প্রতি ডজন ডিমের দামও বেড়েছে প্রায় একই পরিমাণে। বাজারে ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ থেকে ১৪৫ টাকা, যা আগের সপ্তাহে ছিল ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকা।
দুই সপ্তাহ আগেও ব্রয়লার মুরগির দাম ছিল ১১৫ থেকে ১২০ টাকার মধ্যে। ব্রয়লার মুরগির দাম বাড়লেও লাল কক ও পাকিস্তানি লেয়ার মুরগি আগের দাম যথাক্রমে ২১০ থেকে ২১৫ টাকা এবং ২৫০ থেকে ২৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া গরুর মাংস ৫৩০ থেকে ৫৫০ টাকা কেজি, খাসির ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।
অন্যদিকে ব্রয়লার মুরগির দামের পাশাপাশি বেড়েছে ডিমের দাম। বাজার ভেদে ফার্মের লাল ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১১৫ টাকা, যা গেল সপ্তাহে ছিল ১০০ থেকে ১০৫ টাকা। আর মুদি দোকানে খুচরায় প্রতিটি ডিম বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকা, যা গেল সপ্তাহে ছিল ৯ টাকা। প্রতি হালির দাম ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৩৯ থেকে ৪০ টাকায়। সপ্তাহের ব্যবধানে ডিমের দাম ডজনে ১০ টাকা এবং হালিতে বেড়েছে ৩ থেকে ৪ টাকা।
ব্যবসায়ীরা জানান, গরমের কারণে ব্রয়লার মুরগির দাম অনেক দিন কম ছিল। এখন একটু গরম কমায় দাম বাড়তে শুরু করেছে। আবার মাংসের দাম বাড়লে ডিমের চাহিদা বেড়ে যায়। তাই এ সময় ডিমের দাম বাড়ছে।
অন্য দিকে বাজারে পেঁয়াজের দাম কমার কোনো লক্ষণই দেখা যাচ্ছে না। সরকারের কর্তা-ব্যক্তিরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দাম কমার কথা বললেও গেল দেড় সপ্তাহেও তার প্রভাব পড়েনি বাজারে। ভারতীয় পেঁয়াজের আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় খবর শুনেই গেল সপ্তাহে হঠাৎ করেই পেঁয়াজের দাম এক লাফে প্রায় দ্বিগুণ হয়। ৫০ থেকে ৫৫ টাকা কেজি দরের দেশি পেঁয়াজের দাম ঠেকে এক লাফে ৭৫ থেকে ৮০ টাকায়। আর আমদানি করা পেঁয়াজের দাম দাঁড়ায় ৭০ থেকে ৭৫ টাকায়। পেঁয়াজের এমন দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে খোলাবাজারে পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)।
খোলাবাজারে বিক্রির পাশাপাশি পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে করণীয় ঠিক করতে সরকারি বিভিন্ন দপ্তর, পেঁয়াজের আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। বৈঠকের পর নতুন বাণিজ্য সচিব ড. মো. জাফর উদ্দিন এবং আবু রায়হান আল বিরুনি ঘোষণা দেন ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পেঁয়াজের দাম কমে যাবে। তবে গেল ১০ দিনেও তার প্রতিফলন ঘটেনি। এখনও দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকা কেজিতে। আর আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকায়।
ব্যবসায়ীরা বলেন, টিসিবি ৪৫ টাকায় পেঁয়াজ বিক্রি করলেও তা বাজার চাহিদার তুলনায় নগণ্য। ঢাকার খুব সামান্যসংখ্যক মানুষই তা পাচ্ছেন। তাই টিসিবির পেঁয়াজ বিক্রির প্রভাব বাজারে পড়ছে না। পেঁয়াজের দাম কমাতে হলে বাজারে সরবরাহ বাড়াতে হবে। বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়াতে আমদানি বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই বলেই মনে করেন তারা।
এদিকে শীতের আগাম সবজি শিম, ফুলকপি, পাতাকপি, মুলার সরবরাহ বাড়লেও আগের মতোই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে প্রায় সব ধরনের সবজি। গেল সপ্তাহের মতোই শিম বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ টাকায়। ছোট আকারের বাঁধাকপি ও ফুলকপি ৩০ থেকে ৪০ টাকা, মাঝারি আকার ৫০ থেকে ৬০ টাকা, মুলা ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্য সবজির মধ্যে টমেটো ৮০ থেকে ১০০ টাকা, গাজর ৭০ থেকে ৮০, ঢ্যাঁড়স, পটোল ও কাকরোল ৪০ থেকে ৫০ টাকা, ঝিঙা- ধুন্দল ও করলা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, বেগুন ও শশা ৬০ থেকে ৭০ টাকা, বরবটি ও কাঁচা মরিচ ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে।