স্টাফ রিপোর্টার: আজ বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সাক্ষাত করেন আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ, মা রোকেয়া বেগম এবং ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ। এসময় আবরারের মা প্রধানমন্ত্রীকে জড়িয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। প্রধানমন্ত্রী আবরারের মাকে সান্তনা দিয়ে অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির আশ্বাস দেন।
দ্রুত সময়ের মধ্যে বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যার সঙ্গে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সেইসঙ্গে দোষীরা যে দলেরই হোক না কেন তাদের ছাড় দেয়া হবে না বলেও জানিয়েছেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী তাকে সান্তনা দিয়ে বলেন, আবরার হত্যার বিচার দ্রুত শেষ করতে আইনমন্ত্রীকে ইতোমধ্যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ সময় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, যুগ্ম সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ ও কুষ্টিয়া সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের জানান, সাক্ষাৎকালে আবরারের মা রোকেয়া খাতুন প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, আপনি মায়ের আসনে থেকে ঘটনার পর হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে যে কঠোর ভূমিকা নিয়েছেন সে জন্য আপনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানোর ভাষা আমার নেই।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমি ঘটনাটি শোনার সাথে সাথে সিসি টিভি ফুটেজ দেখে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি। আমি দেখতে চাইনি কে কার লোক। আপরাধী কে বা কোন দল করে সেটা বিবেচনা করিনি। তিনি বলেন, অপরাধীর রাজনৈতিক পরিচয় যাই হোক না কেন, সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওই সময় কিছু শিক্ষার্থী ভিডিও ফুটেজ আটকানোর চেষ্টা করেছে। সেটা তারা কেন করেছে তা এখনো আমার বোধগম্য নয়। তা না হলে হয়তো সব অপরাধী আরও আগেই গ্রেফতার হতো।
তিনি আবরারের মায়ের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনাকে সান্ত্বনা জানানোর ভাষা আমার জানা নেই। শুধু বলব আমাকে দেখেন। স্বজন হারানোর বেদনা আমি বুঝি। আমিও এক রাতে সব হারিয়েছিলাম। আমি তখন বিচারও পাইনি।
এই সময় আবরারের মা রোকেয়া খাতুন ও বাবা বরকতউল্লাহ প্রশাসন ও দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
উল্লেখ্য, রোববার (৬ অক্টোবর) দিবাগত মধ্যরাতে শিবির সন্দেহে ছাত্রলীগ নেতাদের বেদম পিটুনিতে নির্মমভাবে নিহত হন বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদ। এঘটনায় কেঁপে ওঠে গোটা দেশ।
আবরার বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের (১৭তম ব্যাচ) ছাত্র ছিলেন। তিনি থাকতেন বুয়েটের শেরেবাংলা হলের নিচতলার ১০১১ নম্বর কক্ষে। ৬ অক্টোবর একই হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে তাকে নির্যাতন করেন বুয়েট ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মী। রাত ৩টার দিকে হল থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।