হাবিবুর রহমান খান:
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার নবীপুর পশ্চিম ইউনিয়নের পৈয়াপাথর গ্রামের হারুনুর রশীদের ছেলে রুবেল মিয়ার স্ত্রী লাইলী আক্তারের (২৫) ময়না তদন্তের জন্য দাফনের প্রায় সাড়ে চার মাস পর আদালতের নির্দেশে কবর থেকে লাশ উত্তোলন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলার পৈয়াপাথর গ্রামের কবরস্থান থেকে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও মুরাদনগর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইফুল ইসলাম কমললের উপস্থিতিতে লাশ উত্তোলন করে সদর উপজেলার দিলালপুর কুমিল্লা পুলিশ ব্যুারো অব ইনভেস্টিগেশন(পিবিআই)।
মামলার অভিযোগ ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১০ বছর পুর্বে জেলার ব্রাহ্মনপাড়া উপজেলার ষাইটশালা গ্রামের জিবন মিয়ার মেয়ে লাইলী আক্তারের(২৫) সাথে মুরাদনগর উপজেলার পৈয়াপাথর গ্রামের হারুনুর রশীদের ছেলে রুবেল মিয়ার(২৮) সামাজিক ভাবে বিয়ে হয়। দাম্পতি জীবনে দুটি কন্যা এবং একটি ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। পারিবারিক কলহের জের ধরে গত ২০ মে রুবেল মিয়া ও তার দুই ভাইসহ কয়েকজনকে নিয়ে তার স্ত্রী লাইলী আক্তারকে ব্যপক মারধর করে। এক পর্যায়ে ওই গৃহবধূর গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়। এ সময় তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে উদ্ধারে করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে প্রেরন করে। পরে ২৬ মে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢামেকে তার মৃত্যু হয়।
পরে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই তরিগড়ি করে গৃহবধূর লাশ দাফন করে ঘাতকরা। এ নিয়ে লাইলীর মা জামিলা খাতুন ৭ জুলাই আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। আদালত মামলাটি থানায় এজহারভূক্ত করে তদন্ত করতে পিবিআইকে নির্দেশ প্রদান করেন। এরই প্রেক্ষিতে পিবিআই মামলার প্রধান আসামী রুবেল মিয়াকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদে রুবেল ঘটনার গুরুত্বপুর্ণ ও চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রদান করে করে। তবে তাকে কোন প্রকার নির্যাতন এবং মারধর হরা হয়নি লাইলী গ্যাসের চুলায় অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়।
এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও কুমিল্লা পুলিশ ব্যুারো অব ইনভেস্টিগেশন(পিবিআই)’র ইন্সপেক্টর মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন বলেন, আদালতের নির্দেশে ময়নাতদন্তের জন্য গৃহবধূ লাইলী আক্তারের লাশ উত্তোলন করা হয়েছে। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন প্রধান ঘাতক রুবেল মিয়াকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। তদন্ত করে বাকী আসামীদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।