কাউন্সিলর পদ হারালের ক্যাসিনো বাণিজ্যসহ নানা অভিযোগ ওঠা ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর এ কে এম মমিনুল হক সাঈদ।
ঢাকার মতিঝিল এলাকার এই কাউন্সিলরকে অপসারণ করে আদেশ জারি করেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ।
আদেশে বলা হয়, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন থেকে অভিযোগ পাওয়া গেছে যে, মমিনুল হক যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়া কর্পোরেশনের ১৮টি সভার মধ্যে ১৩টি সভায় অনুপস্থিত ছিলেন। এর মধ্যে টানা তিনবার (প্রথম থেকে তৃতীয় সভায় পরপর), চারবার (সপ্তম থেকে ১০ম) ও ছয়বার (১২তম থেকে ১৭তম) সভায় অনুপস্থিত ছিলেন।
এতে আরও বলা হয়, কাউন্সিলর সাঈদ স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া বিদেশে গমন ও অবস্থান করেছেন। এসব বিষয়ে আত্মপক্ষ সমর্থনে জবাব দেয়ার জন্য তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছিল। তিনি জবাব দিয়েছেন, কিন্তু আত্মপক্ষ সমর্থনে যৌক্তিক প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেননি।
তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো সরেজমিন তদন্তের জন্য সরকার একজন তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োজিত করে। সেই তদন্ত প্রতিবেদনে অভিযোগগুলো প্রমাণিত হয়েছে বলে আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে।
আদেশে এসব কর্মকাণ্ডকে ‘স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) আইন, ২০০৯’ অনুযায়ী কাউন্সিলর পদ হতে অপসারণযোগ্য অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করে বলা হয়, আইনের ধারা ১৩ এর উপধারা (২) অনুযায়ী মমিনুল হককে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৯ নম্বর সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদ থেকে অপসারণ করা হয়েছে।
মমিনুল হক সাঈদ যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ কমিটির যুগ্ম সম্পাদক। ২০১৫ সালে ডিএসসিসির ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নির্বাচিত হন তিনি।
গত মাসে রাজধানীতে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু হলে গ্রেফতার হন যুবলীগের কয়েকজন নেতা। তারাই জানান, ক্যাসিনো ব্যবসায়ের হোতাদের মধ্যে অন্যতম হলেন কাউন্সিলর মমিনুল হক সাঈদ। রাজধানীর ফকিরাপুলের ওয়ান্ডারার্স ক্লাবটি চালাতেন মমিনুল হক। ওই ক্লাবে নিয়মিত ক্যাসিনো, জুয়া, মাদকের আসর বসত। র্যাবের অভিযানের পরপরই মমিনুল হক সিঙ্গাপুর পালিয়ে গেছেন।
এই কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করেন ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের পরিচালক (স্থানীয় সরকার) এম ইদ্রিস সিদ্দিকী।