ডেস্ক রিপোর্ট: অবশেষে বাংলাদেশের ক্রিকেটের সঙ্কটের সমাধান হয়ে গেছে। ক্রিকেটারদের উত্থাপিত সব দাবি মেনে নিয়েছে ক্রিকেট বোর্ড। বুধবার রাতে বৈঠকে বসার পর আন্দোলনরত ক্রিকেটারদের দাবি মেনে নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন।
ক্রিকেটাররাও ঘোষণা দিয়েছেন, যথারীতি তারা স্বাভাবিক ক্রিকেট কার্যক্রমে ফিরে আসবেন।
বিসিবি কর্মকর্তা এবং ক্রিকেটার বৈঠকের পর যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন এবং আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী, টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।
এর আগে গুলশানে এক সংবাদ সম্মেলনে ১৩ দফা দাবি তুলে ধরছেন ক্রিকেটারদের মুখপাত্র আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান খান।
সংবাদ সম্মেলনের একেবারে শেষ মুহূর্তে সাকিব আল হাসান এসে জানিয়ে দিলেন, ‘আমরাও দ্রুত সমাধান চাই এবং সবাই মিলে আলোচনা করে বোর্ডের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চাই। কারণ, আমরা মনে করি বোর্ডের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক আগের মতই রয়েছে। বোর্ড কর্মকর্তারা এবং আমরা মিলেই আসলে বিসিবি। সুতরাং, কারো প্রতি আমাদের কোনো ক্ষোভ নেই, দুঃখ কিংবা বিরাগ নেই। আমরা কিছু যৌক্তিক দাবি তুলে ধরেছি এবং নিজেদের ঘুচিয়ে নেয়ার জন্য দেড়টা দিন সময় নিয়েছি। এখন আমরা যে কোনো সময় বোর্ডের সঙ্গে বসতে পারি।সেখান থেকে বেরিয়েই মিরপুরে যান সাকিবরা।
সংবাদ সম্মেলনে উত্থাপিত ক্রিকেটারদের ১৩ দফা দাবিগুলো হলো-
১. ক্রিকেট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের বর্তমান সদস্যদের পদত্যাগ করতে হবে। এই সংগঠনের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। সেই সঙ্গে প্রফেশনাল ক্রিকেটার অ্যাসোসিয়েশন নামে আরেকটি সংগঠন প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। ক্রিকেটাররা নির্বাচন করেই তাদের ঠিক করবেন। পেশাদার ক্রিকেটারদের স্বার্থ নিয়ে তারা কাজ করবে।
২. ঢাকা প্রিমিয়ার লিগসহ ঢাকার অন্য লিগগুলো আগের অবস্থানে ফিরিয়ে নিতে হবে। প্লেয়াররা যাতে নিজের পছন্দে ক্লাব চয়েস করতে পারে।
৩. বিপিএল আগামী বছর থেকে আগের নিয়মে নিতে হবে। প্লেয়ার কেনার ক্ষেত্রে। আর বিদেশি ও দেশি ক্রিকেটারদের মধ্যে বৈষম্য দূর করতে হবে।
৪. প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের ম্যাচ ফি ১ লাখ টাকা দিতে হবে এবং পারিশ্রমিক আরও বাড়াতে।
৫. খেলার সুবিধা আরও বাড়াতে হবে।
৬. জাতীয় ক্রিকেটের চুক্তিতে খেলোয়াড় বাড়াতে হবে।
৭. স্টাফ, গ্রাউন্ডসম্যান, কোচিং স্টাফদের বেতন ও সুবিধা বাড়াতে হবে। বিদেশিদের মতো বিবেচনা করতে হবে।
৮. লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেট ম্যাচ ও টুর্নামেন্টে বাড়াতে হবে। এছাড়া ঘরো টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টও বাড়াতে হবে।
৯. ঘরোয়া ক্রিকেটে ক্যালেন্ডার করে তা মেনে খেলতে হবে।
১০. খেলোয়াড়দের বকেয়া বেতন পরিশোধ করতে হবে সময় মতো।
১১. দুটির বেশি ফ্র্যাঞ্চাইজেত খেলতে দিতে হবে।
১২. ক্রিকেটের ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা ও ক্রিকেটের আয়ের একটা অংশ ক্রিকেটারদের দিতে হবে।
১৩. নারী ক্রিকেটারদের তাদের ন্যায্য হিস্যা দিতে হবে।
এছাড়া আরও কিছু যোগ করে তিনি বলেন, ‘অনেক কিছু ত্যাগ করে ঝুঁকি নিয়ে ক্রিকেটাররা খেলতে আসে। তবে অনিশ্চয়তার মধ্যে থাকতে হয়। ফলে ক্রিকেটারদের জন্য আলাদা একটা ফান্ড থাকতে হবে। প্রভিডেন্ড ফান্ড থাকতে পারে।’
এর আগে সোমবার সংগঠনের স্বাধীনতা, পারিশ্রমিক বৃদ্ধি, ঘরোয়া ক্রিকেটের সংস্কার, চুক্তি কাঠামোর পরিবর্তনসহ সর্বমোট ১১ দফা দাবিতে ধর্মঘট ডাকেন ক্রিকেটাররা।