ডেস্ক রিপোর্ট: লঞ্চের ধাক্কায় পায়ের পাতা কাটা পড়া শিশু জাইমা নেওয়াজের চিকিৎসার জন্য ১৫ দিনের মধ্যে তিন লাখ দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
একইসঙ্গে শিশু জাইমার চিকিৎসার জন্য তার পরিবারকে ৫০ লাখ টাকা দেয়ার নির্দেশনা কেন দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
রোববার শিশুটির বাবার করা এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুরের রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এই আদেশ দেন।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার আনিসুল হাসান ও শাহীনুজ্জামান শাহীন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।
আদালতের আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।
তিনি বলেন, ‘আদালত রুল জারি করে চিকিৎসার জন্য শিশু জাইমার পরিবারকে ১৫ দিনের মধ্যে তিন লাখ টাকা দিতে সাত থেকে ১২ নম্বর বিবাদীকে নির্দেশ দিয়েছেন।’
আনিসুল হাসান বলেন, ঘটনার সময় ওই শিশুর বয়স ছিল ছয় বছর।
রিটের বিবাদীরা হচ্ছেন নৌপরিবহন সচিব, বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান, বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান, নৌ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র, নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক, লঞ্চের মালিক মামুনুর রশিদ, প্রথম শ্রেণির মাস্টার আব্দুর রউফ, দ্বিতীয় শ্রেণির মাস্টার নাসির উদ্দিন গাজী, ২য় শ্রেণির চালক মো. স্বপন, তৃতীয় শ্রেণির চালক মো. ফারুক হোসেন ও ম্যানেজার মনিরুজ্জামান।
‘পালিয়ে বেড়াচ্ছেন লঞ্চ দুর্ঘটনায় পা হারানো শিশু জাইমার পরিবার’ শীর্ষক প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে এ রিট করেন।
২০১৮ সালের ২২ মার্চ প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘এমভি ইয়াদ লঞ্চের মালিক মামুন অর রশিদ ও তার লোকজনের হুমকিতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন লঞ্চ দুর্ঘটনায় আহত শিশু জাইমা নেওয়াজের পরিবার। মামলা তুলে নেয়ার জন্য লঞ্চ মালিক শিশুর বাবা জামাল গাজীকে জীবন নাশ, বাচ্চা অপহরণ ও এসিড ছুড়ে সপরিবারে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে।
এ ঘটনায় শিশু জাইমার মা নাজমুন নাহার বাদী হয়ে আমতলী উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সরোয়ার হোসেনের আদালতে মামলা করেন।
মামলার বিবরণ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ২৯ ডিসেম্বর জাইমা নেওয়াজ জিসা, বাবা জামাল গাজী, মা নাজমুন নাহার ও ছেলে খাঁজা গরীবে নেওয়াজকে নিয়ে ঢাকা থেকে আমতলীতে আসার উদ্দেশ্যে ফতুল্লা লঞ্চঘাটে আসেন। এমভি ইয়াদ লঞ্চটি ফতুল্লা ঘাটে এসে জোরে ধাক্কা দেয়। এতে শিশু জাইমা ছিটকে পড়ে। লঞ্চ ও লঞ্চঘাটের মাঝখানে তার ডান পা আটকে যায়। এতে শিশু জাইমার ওই পায়ের পাতার সম্মুখভাগ বিছিন্ন হয়ে যায়।