স্টাফ রিপোর্টার: নারায়নগঞ্জের সোনারগাঁও থানার আওতাধীন তালিকাভুক্ত দাগী আসামীদের চিহ্নিত করতে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছেন নারায়নগঞ্জ ‘খ’ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ খোরশেদ আলম। সোনারগাঁও ও বন্দরের জনবহুল স্থান ও পৌরসভার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে লাগানো হয়েছে তালিকাভুক্ত দাগী আসামীদের তালিকা। এ উদ্যোগ জননিরাপত্তা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ রাখবে বলে স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ জানান। ব্যতিক্রমী এমন উদ্যোগের জন্য সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খোরশেদ আলম।
জানা যায়, নারায়নগঞ্জের সোনারগাঁও ও বন্দর সারাদেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ স্থান হিসেবে পরিচিত। এটি একটি প্রসিদ্ধ ব্যবসায়িক কেন্দ্র। দেশের বিভিন্ন এলাকার মানুষ এখানে ব্যবসা-বাণিজ্য করেন। জনবহুল এ এলাকায় রয়েছে অসংখ্য অপরাধী। অপরাধীদের না চেনায় এবং তাদের পরিচয় না জানার কারণে এতদিন ব্যবসায়ী সহ বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষকে অনেক প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হয়েছে।
বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে নারায়নগঞ্জ ‘খ’ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খোরশেদ আলম ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নেন। ঝড়বৃষ্টিতে যেন তালিকার পোস্টার নষ্ট না হয়ে যায় সেজন্য বৃহস্পতিবার স্থায়ীভাবে পিভিসি ব্যানারের মাধ্যমে অপরাধীর নাম, ঠিকানা, মামলার ধারা সহ বিস্তারিত তথ্যাদি লাগানো হয়েছে।
গুরুত্বপূর্ণ স্থান সমূহে ডিজিটাল ব্যানার, পেস্টুন লাগানোকালে সোনারগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ মনির ও বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ রফিক সহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
নারায়নগঞ্জ ‘খ’ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ খোরশেদ আলম বলেন, অপরাধী যত পথ তৈরি করে অপরাধের দায় এড়িয়ে পালিয়ে থাকতে তার চেয়েও অধিক মাস্টারমাইন্ড হচ্ছে আইনপ্রণেতারা। বাংলাদেশ পুলিশের এমন একজন রত্ন, আমার অভিভাবক, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি জনাব হাবিবুর রহমান বিপিএম(বার), পিপিএম(বার) । যিনি বাংলাদেশ পুলিশকে নিজ মেধা শ্রম, প্রজ্ঞায় অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাচ্ছেন।
তাঁর নির্দেশনায় এবং নির্দেশিত পন্থায় সোনারগাঁ ও বন্দর থানার বিভিন্ন জনবহুল স্থানে, বিভিন্ন অফিসে , জনপ্রতিনিধিদের কার্যালয়ে ওয়ান্টেড আসামিদের তালিকা পিভিসি ডিজিটাল ব্যানার, পোস্টার প্রকাশ করি যেন কোন অপরাধী আত্মগোপনে থাকতে না পারে।
তিনি বলেন, অনেক সময় অনেক তালিকাভুক্ত, দাগী আসামী অপরাধ করে আড়ালে চলে যায়। ছদ্মবেশে মিশে যায়, সামাজিক আইডেন্টিটি তৈরি করে, পলিটিকাল আইডোলজি ব্যবহার করে ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যায়। তাদের ফাইল রেকর্ড, পুলিশ কেইস, অপরাধ জীবনের ইতিহাস কেউই জানেনা।
অপরাধীরা কারো ভাই, কারো বন্ধু, কারো আত্মীয়, কারো রাজনৈতিক সহযোদ্ধা। সমাজের আশেপাশে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন জনের সাথে মিশে ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যায় গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকার পরেও। চিনা যায়না, জানা যায়না।
জনাব হাবিবুর রহমান বিপিএম(বার), পিপিএম(বার) এর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় প্রথমবারের মত তালিকাভুক্ত আসামিদের তালিকাকে বিভিন্ন জনসম্মুখে প্রকাশের যুগান্তকারী পদক্ষেপ কার্যকর করি। ঝড়বৃষ্টিতে যেন এইসব তালিকার পোস্টার নষ্ট না হয়ে যায় তাই স্থায়ীভাবে পিভিসি ব্যানারের মাধ্যমে সোনারগাঁও ও বন্দরের বিভিন্ন পৌরসভা, জনবহুল স্থানে টানিয়ে দেওয়া হলো। মামলার ধারা, অপরাধীর নাম ঠিকানা সহ।
তিনি আরো বলেন, ওয়ান্টেড আসামিরা আর এখন থেকে গ্রেফতারি পরোয়ানা আড়াল করে বাড়তি কোন সুবিধা কোথাও থেকে নিতে পারবেনা। এলাকার সর্বত্র তালিকা প্রকাশ করে টানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এলাকার গণ্যমান্য লোকজন, সাংবাদিক, জনপ্রতিনিধি, জনসাধারণ যারাই তালিকায় উল্লেখিত কোন ওয়ান্টেড আসামিকে দেখবেন আপনারা নিকটস্থ থানায় তথ্য দিয়ে সাহায্য করবেন। ওয়ান্টেড আসামিদের আইনের আওতায় এনে নিরাপদ সমাজ গড়াই আমাদের উদ্দেশ্য।
অপরাধ মুক্ত সুস্থ–সুন্দর সমাজ গড়তে বাংলাদেশ পুলিশ ঐক্যবদ্ধ। প্রয়োজন জনসচেতনতা এবং সকলের আন্তরিক সহযোগিতা।