ডেস্ক রিপোর্ট: দিনাজপুরের বীরগঞ্জে ৪০ জন দরিদ্র ও এতিম তরুণ-তরুণীর যৌতুকবিহীন বিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিয়েতে নব দম্পতিদেরকে নতুন পরিবার সাজাতে দেওয়া হয়েছে প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র। যৌতুকের কুপ্রভাব এবং ধর্মীয়ভাবে যৌতুক দেওয়া-নেওয়ার নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি প্রতিটি ঘরে ঘরে ছড়িয়ে দিতে এমন ব্যতিক্রম আয়োজন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।
আজ শুক্রবার বিকেলে দিনাজপুরের বীরগঞ্জের বটতলী ফয়জিয়া মদিনাতুল উলম মাদরাসা মাঠে এই বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়। বিয়ে শেষে নব দম্পতিদের হাতে সেলাই মেশিন, ছাগল, লেপ-তোশক, রান্নাঘরের প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র, হাঁড়ি-পাতিলসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র তুলে দেওয়া হয়। বিয়ের এই সুন্দর আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন দিনাজপুর-১ আসনের স্থানীয় সংসদ সদস্য মনোরঞ্জন শীল গোপাল। এসময় তিনি ২০ জন কনেকে শাড়ি প্রদান করেন। বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামা ও ইসলাহুল মুসলিমীন পরিষদ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান শাইখুল হাদিস আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদের তত্ত্বাবধানে িএই বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়। বিয়ের সব তদারকি করেন বাংলাদেশ ইসলাহুল মুসলিমীন পরিষদ দিনাজপুর প্রতিনিধি মাওলানা আইয়ুব আলী আনসারী। আয়োজকরা জানান, এসব বর-কনে এতিম ও দরিদ্র। বিয়ে করার সামর্থ নেই বললেই চলে। আর তাই বিয়ের এমন আয়োজন করা হয়।
বিয়ের অনুষ্ঠানে বীরগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইয়ামিন হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এম এ খালেক, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. নুর ইসলাম নুর ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামিম আলম ফিরোজ, সাতোর ইউপি চেয়ারম্যান রেজাউল করিম শেখ, জেলা পরিষদ সদস্য আতাউর রহমান বাবু, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আয়শা আক্তার বৃষ্টিসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গও উপস্থিত ছিলেন।
আয়োজক ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ জানান, এ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের অসহায় তরুণ-তরুণীদের মধ্যে যারা খরচের ভয়ে বৈবাহিক জীবন গঠন করতে পারেন না তাদের জন্যই যৌতুকবিহীন বিয়ের এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। তাছাড়া এই ধরনের বিয়ের মাধ্যমে যৌতুকের যে কুপ্রভাব রয়েছে সেটি তুলে ধরা এবং যৌতুক দেওয়া কিংবা নেওয়া যে ধর্মীয়ভাবে নিষেধ সেটিও জনগণের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়াই এই বিয়ের লক্ষ্য।
প্রধান অতিথি স্থানীয় সংসদ সদস্য মনোরঞ্জন শীল গোপাল বলেন, যৌতুক একটি সামাজিক ব্যাধি। আর এই ব্যাধি দূর করার জন্য সরকার প্রাণপণ চেষ্টা করে যাচ্ছে। সরকারের পাশাপাশি সকলে যৌতুকের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ালে সামাজিক অবক্ষয়ের হাত থেকে মুক্ত হবে সমাজ। তিনি মনে করেন, এ জাতীয় উদ্যোগে আমাদের সমাজ সুন্দরের পথে হাঁটবে, সমাজ হবে কুসংস্কারমুক্ত।