ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হসপিটালে মুক্তিযোদ্ধা, গরিব রোগী ও সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একদম ফ্রি চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির যুগ্ম পরিচালক অধ্যাপক ডা. বদরুল আলম। একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন তিনি।
অধ্যাপক ডা. বদরুল আলম বলেন, “এটি সরকারি হাসপাতাল। এখানে চিকিৎসা ব্যয় বলতে তেমন কিছুই নেই। কেবল সরকারের নির্ধারিত একটা সামান্য ফি আছে। যেমন: একটা সিটি স্ক্যান বাহিরে করাতে লাগে সাড়ে চার হাজার টাকা আর এখানে লাগে মাত্র দুহাজার টাকা। এছাড়া দুঃস্থ ও পথচারী যারা দুর্ঘটনায় পড়ে হাসপাতালে আসেন, যাদের কোনো আত্মীয়-স্বজনের খোঁজ পাওয়া যায় না তাদের জন্যও ফ্রি।”
তিনি আরও বলেন, ভর্তি হওয়া রোগীদের ক্ষেত্রে পেয়িং বেডের জন্য সপ্তাহে ২৬০ টাকা লাগে। আর এসি কেবিনের ভাড়া হচ্ছে মাত্র ৫০০ টাকা, আর ডাবল শেয়ার কেবিন মাত্র ২৫০ টাকা। অপারেশনের খরচও এখানে খুবই নগণ্য। বড় অপারেশন মাত্র দুই হাজার আর ছোট অপারেশন মাত্র ১ হাজার টাকা লাগে। যে অপারেশন বাহিরে করলে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা লাগতো, সেই অপারেশনটি এখানে করলে মাত্র দুই হাজার টাকা লাগে। এমনকি গরিব রোগীদের ফ্রিও করানো হয়।
প্রায় রোগীদের অভিযোগ, আপনারা সিট দিতে পারেন না—জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এটা সত্যি কথা। আমি স্বীকার করি, যেসব রোগী ভর্তির জন্য আসেন তাদের সবাইকে সিট দেয়া সম্ভব হয় না। একটা কথা মনে রাখতে হবে, ১৬ কোটি মানুষের দেশে মাত্র সাড়ে চারশো বেডের একটা নিউরো হাসপাতাল যথেষ্ট না। তবে যে অভিযোগ মানুষ করে থাকেন, তার কিছুটা সত্যি আবার কিছুটা সত্য নয়। আমাদের দেশের মানুষের মধ্যে একটা প্রবণতা আছে, যে কোনো রোগ হলেই হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে।”
“আমরা যখন এ হাসপাতাল করি তখন আমরা বলেছিলাম, খুব বেশি প্রয়োজন না হলে কোনো রোগীকে ভর্তি রাখবো না। তাদেরকে আউটডোরে দেখবো, জরুরি বিভাগে দেখবো। সার্বিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় চিকিৎসাটা তাদের বাড়িতে দিয়ে দিবো, যাতে পুরো পরিবার তাদের দেখাশোনা করতে পারে,” যোগ করেন অধ্যাপক ডা. বদরুল আলম।
তিনি বলেন, “রোগীর সঙ্গে যখন দূরদূরান্ত থেকে স্বজনরা আসেন, তখন তারা আশপাশের কোনো হোটেলে থাকেন। তখন তাদের অনেক টাকা-পয়সা নষ্ট হয়। এজন্য আমরা মনে করি, যেসমস্ত রোগীদের আমরা চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে পাঠাতে পারবো অথবা আশপাশের হাসপাতালে থেকে যারা চিকিৎসা চালিয়ে নিতে পারবে সেসব রোগীদের ভর্তি করার দরকার নেই। সে কারণে যেসব রোগীরা বাসায় বসে সেবা নিতে পারে তাদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিয়ে বাসায় পাঠিয়ে দিই। আর বলে দিই প্রয়োজনে একমাস দুমাস পরে এসে যেন দেখিয়ে যায়। এতে অনেকে অভিযোগ করে বসেন, যে আমাকে তো ভর্তি দিল না।”
যেসব রোগীর এখানে ভর্তি হওয়া জরুরি তাদেরকে ভর্তি করানো হবে জানিয়ে তিনি বলেন, “হয়তো সিট না থাকায় আজকে পারছি না, সেক্ষেত্রে কালকে করবো, কালকে নাহলে পরশু করবো। কিন্তু যাদের চিকিৎসা বাড়িতে করা সম্ভব তাদের কেন ভর্তি করবো? এতে একটা ভুল ধারণা তৈরি হয়, আর সেটা থেকেই সিট না পাওয়ার অভিযোগ উঠে।