লিফলেট, মাস্ক বিতরণ, বেসিন স্থাপন, জীবানুনাশক স্প্রে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে সুরক্ষারেখা এবং পথশিশুদের মধ্যে খাবার বিতরণ সহ বিভিন্ন উদ্যোগ বাস্তবায়নের পাশাপাশি শ্রমজীবিদের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণসহ আরো বেশকিছু পরিকল্পনা রয়েছে।
ফারুক আল শারাহ:
কুমিল্লার লাকসামে করোনাভাইরাস সচেতনতায় তৎপর শিক্ষার্থীদের মানবিক সংগঠন ‘ভিক্টোরি অব হিউম্যানিটি অর্গানাইজেশন’। করোনা প্রতিরোধে সচেতনতা সৃষ্টিতে লিফলেট ও মাস্ক বিতরণ, বেসিন স্থাপন, জীবানুনাশক স্প্রে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে সুরক্ষারেখা এবং পথশিশুদের মধ্যে খাবার বিতরণ সহ বিভিন্ন উদ্যোগ অব্যাহত রেখে সাড়া জাগিয়েছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটি।
সূত্র মতে, ২০১৭ সালের ২৯ মে লাকসামের স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের সম্মিলিতি উদ্যোগে ভিক্টোরি অব হিউম্যানিটি অর্গানাইজেশন যাত্রা শুরুর পর মানবিকতায় একের পর এক ভূমিকা রেখে যাচ্ছে সংগঠনটি। ইতোমধ্যে এ সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবীরা প্রায় সাড়ে ৪ হাজার ব্যাগ রক্তদান, বিনামূল্যে ২৫ হাজার মানুষের রক্তের গ্রুপ নির্ণয়, মাদকের বিরুদ্ধে গণস্বাক্ষর ও বিতর্ক প্রতিযোগিতা, আশ্রয়ন প্রকল্পের সুবিধাবঞ্চিতদের জন্য স্কুল, পথশিশুদের জন্য শিক্ষা, অসহায়-দুঃখী, বন্যার্ত ও শীতার্ত মানুষকে সহযোগিতা, ঈদবস্ত্র বিতরণ, বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি, সেলুন লাইব্রেরি চালু, শহর ও নদীতে পরিচ্ছন্নতা অভিযান, মাছের পোনা অবমুক্তকরণ, দরিদ্র শিক্ষার্থীদের শিক্ষাবৃত্তি প্রদানসহ মানবিক কাজে প্রশংসনীয় ভূমিকা রেখেছে। সংগঠনের প্রচেষ্টায় এ পর্যন্ত হারিয়ে কমপক্ষে ১০জন বৃদ্ধ ও শিশুর সন্ধান নিশ্চিত করে পরিবারের কাছে পৌঁছে দেয়া হয়েছে।
জানা যায়, বাংলাদেশে করোনার প্রভাব শুরু হওয়ার পরপরই গত ২৫ মার্চ থেকে লাকসামে ভিক্টোরি অব হিউম্যানিটি অর্গানাইজেশনের সভাপতি ফয়সাল হোসেন বাপ্পীর নেতৃত্বে ব্যাপক জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে লাকসামে ১০ হাজার লিফলেট বিতরণ, শ্রমজীবি মানুষের মধ্যে সার্জিক্যাল মাস্ক বিতরণ, জনবহুল স্থানে কয়েকটি হ্যান্ডওয়াশিং বেসিন স্থাপন, গুরুত্বপূর্ণ স্থান ও যানবাহনে পাঁজ হাজার লিটার জীবানুনাশক স্প্রে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে ফার্মেসি, মুদি, কাঁচাবাজার ও ব্যাংকের সামনে সুরক্ষারেখা (লেভেল মার্কিং), শতাধিক পথশিশুর মধ্যে শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। প্রতিদিনই সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবীরা যানবাহন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, মসজিদ সহ বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে জীবানুনাশক ছিটানো অব্যাহত রেখেছে। সহসা শ্রমজীবি মানুষের মধ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বিতরণ সহ করোনা প্রতিরোধক আরো বেশ কিছু পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। ভিক্টোরির শতাধিক স্বেচ্ছাসেবী মানবিক সেবায় সর্বদা তৎপর রয়েছে।
টিম লিডার ফয়সাল হোসেন বাপ্পীর নেতৃত্বে করোনা সচেতনতায় কাজ করে যাচ্ছেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল কাইয়ূম, সিনিয়র সহ সভাপতি ফরহাদ হোসেন, সহ সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন, কোষাধ্যক্ষ শামীম আহমেদ, প্রচার সম্পাদক সাইফুল ইসলাম সুজন, দপ্তর সম্পাদক মহসিন মিয়া, কর্মসূচি সম্পাদক রিয়াদ হোসেন নারী, শিশু ও শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ইকবাল মাহমুদ, পরিবেশ ও পাঠাগার বিষয়ক সম্পাদক হাসান মাহমুদ রাজু, নির্বাহী সদস্য রকিবুল হাসান শান্ত, মাইনুল ইসলাম রাসেল, কাউসার আলম, জাকির হোসেন, সদস্য রবিউল, জুবায়ের, তুহিন, রাফি, জুয়েল, হৃদয়, রিসাদ, অন্তু, তোফাজ্জল, রাফিউল, ইমন, মাসুদ, রাজীব, মন্জুর প্রমুখ।
ভিক্টোরি অব হিউম্যানিটি অর্গানাইজেশনের করোনা সচেতনতামুলক প্রতিটি কার্যক্রম স্থানীয়দের মধ্যে আশার সঞ্চার করেছে। বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ তাদের এমন মানবিক কর্মকান্ডের প্রশংসা করেন।
সংগঠনের সভাপতি ফয়সাল হোসেন বাপ্পী জানান, সমস্যাগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোই ভিক্টোরি অব হিউম্যানিটির অর্গানাইজেশন কাজ। এরই লক্ষ্যে করোনা প্রতিরোধ ও সচেতনতায় আমাদের শত শত স্বেচ্ছাসেবী তৎপর রয়েছে। আমরা সমস্যাগ্রস্ত প্রতিটি মানুষের পাশে দাঁড়াতে চাই। কিন্তু আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে অনেকসময় তা সম্ভব হয়ে উঠেনা। মানবিক কাজে তিনি সকলকে এগিয়ে আসার উদাত্ত আহবান জানান।