সামছুল আলম সাদ্দাম (জয়):
সুদিন আসবেই, পাল্টে যাচ্ছে আমাদের পৃথিবীটা! যতই ঝড় আসুক হাসের কোন ভয় নাই। তারা ভেসে থাকবে। দীর্ঘমেয়াদী লকডাউনে হু হু করে কমছে বায়ুদূষণের মাত্রা! চীন, ইতালি বা ব্রিটেনের আকাশে অবিশ্বাস্য গতিতে কমছে নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইড, সালফার ডাই অক্সাইড আর কার্বন মনোক্সাইডের মাত্রা! পরিবেশবিদদের হতবাক করে নিউইয়র্কের আকাশে দূষণের মাত্রা কমেছে ৫০%য়েরও বেশী! স্রেফ উপগ্রহ ছবিতে নয়, ঘরবন্দি ইউরোপের মানুষ খালি চোখেও দেখতে পাচ্ছে ঝকঝকে নির্মল আকাশ! স্মরণকালের মধ্যে যা কখনো দেখেনি তারা! দল বেঁধে ফিরে আসছে পরিযায়ী পাখির দল। সভ্যতা থেকে দূরে সরে যাওয়া নিরীহ ডলফিনের ঝাঁক ফিরে আসছে মানুষের কাছে! রাশ পড়েছে বিশ্ব ঊষ্ণায়নের হারেও। ক্ষুদ্র এক ভাইরাস গোটা দুনিয়ার ভোল পাল্টে দিচ্ছে । পাল্টে দিচ্ছে আমাদের মানসিকতা, আমাদের জীবনযাত্রা। একদিকে সীমান্ত মুছে গিয়ে গোটা পৃথিবী দাঁড়িয়েছে এক আকাশের নীচে, অজানা অচেনা প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেমেছে একজোট হয়ে। এরপর ঘরবন্দী হয়ে যাওয়া মানুষ প্রাথমিক ধাক্কাটুকু সামলে হাত বাড়িয়ে দেবে প্রতিবেশীর দিকে। চারপাশের পরিবেশ নিয়ে ছিনিমিনি খেলার আগে ভাববে আত্মীয়, বন্ধু, পড়শীদের কথা। দেশি-বিদেশি বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ এবং সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ থেকে বোঝা যায়, চলতি মাসের মাঝামাঝি থেকে আগামী মাসের প্রথম ভাগ পর্যন্ত দেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির অবনতি ঘটার আশঙ্কাই বেশি। এর ওপর যেভাবে মানুষের মধ্যে এক ধরনের শৈথিল্য দেখা যাচ্ছে তাতে আক্রান্ত আরো বাড়বে বলেই মনে হয়। তারপরও অন্যান্য দেশের পরিস্থিতি অনুসারে আশা করছি, জুনের মাঝামাঝি সময় থেকে পরিস্থিতির উন্নতি ঘটবে এবং ধীরে ধীরে দেশে প্রাদুর্ভাব কমে যাবে। এককথায় বলতে গেলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে সুদিন বেশি দূরে নয়। তবে এ ক্ষেত্রে মানুষের সচেতনতা ও সতর্কতার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। মানুষ যদি সরকারের নির্দেশনা না মানে, সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব না মেনে বেপরোয়াভাবে চলাফেরা করে, ঘরে না থেকে অযথা বাইরে ঘোরাফেরা করে- তবে তো পরিস্থিতি ভালো হতে আরো দেরি লাগবেই। এ জন্য সবাইকে বলব, আয়-রোজগারের জন্য সরকার কিছু ক্ষেত্রে শিথিল করলেও সেটা যেন সব মানুষ অপব্যবহার না করে। নিজের ভালোর জন্যই স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। বাইরে গেলে কাজ সেরে দ্রুত ঘরে ফেরা। বাইরে থাকা অবস্থায় সতর্ক ও সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে হবে। বারবার সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নিতে হবে। ঘরে ফেরার পর প্রথমেই নিজেকে জীবাণুমুক্ত করতে হবে। কোনো উপসর্গ দেখা দিলে নিজেকে পরিবারের অন্যদের থেকে আলাদা করে নিতে হবে। প্রয়োজনমতো পরীক্ষা করে আইসোলেশন বা কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে।
লেখক: সহ -সভাপতি, ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগ।