মোঃ খোরশেদ আলম:
বিগত ৭টা ঈদ যাবত বিভিন্ন হাইওয়ে কেন্দ্রিক দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে আমাকে। সাভারে থাকাকালীন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে। নারায়গঞ্জে পোস্টিং হবার পর ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়ক কখনো, কখনোবা ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে দায়িত্ব পালন।
আমি গত ৬/৭ টা ঈদে, রমজানে সবসময়ই এই দায়িত্বটা গুরুত্ব সহকারে পালন করেছি। বাড়ি গিয়ে ঈদের আনন্দও করা হয়নি আমার। সবসময় চেয়েছি পথের মানুষগুলো নিরাপদে বাড়ি ফিরুক। অন্যান্য বছরের চেয়ে এইবার হাইওয়ের দায়িত্বটা একটু চ্যালেঞ্জিং। করোনা ভাইরাস মহামারি আকার ধারণ করায় যানবাহন কে দ্রুত পারাপার করানোর চেয়ে নিয়ন্ত্রণ, রুটিন চেকাপ, যাচাই বাছাই, তল্লাশি করতে হয়।
আজ ০৮/০৫/২০২০ ইংরেজি তারিখে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা সিলেট হাইওয়ের তদারকি করার সময়। নারায়ণগঞ্জ জেলা করোনা ভাইরাসের জন্য ডেঞ্জার জোন। জনজীবন বিপর্যস্ত এমনিতেই৷ ঢাকা -চট্টগ্রাম , ঢাকা- সিলেট মহাসড়ক নারায়ণগঞ্জ এলাকা দিয়ে বেশ কিছু জেলাকে রাজধানী ঢাকার সাথে সংযুক্ত করেছে। সারা বাংলাদেশের ব্যস্ততম সড়কগুলোর মধ্যে একটা। ২৪ ঘন্টাই এই মহাসড়কে বিভিন্ন যানবাহনে পণ্য পরিবহন, যাত্রী পরিবহনে ব্যস্ত থাকে। করোনা ভাইরাস যেহেতু সংক্রামক রোগ আর সেটা মানুষে মানুষে ছড়ায়। সেহেতু জনসমাগম এড়ানো, অপ্রয়োজনীয় যানবাহন নিয়ন্ত্রণের কাজটা করতে হয় ডেইলি রুটিন চেকাপ হিসেবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ব্যস্ত মহাসড়কে।
সরকার ঘোষিত জরুরি পরিসেবা যেমন বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস, ইন্টারনেট, ফায়ার সার্ভিস, পরিচ্ছন্নতা সংশ্লিষ্ট, চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত, ঔষধ শিল্পে জড়িত, খাদ্য ও কৃষি উৎপাদন, পরিবহনসহ আরো কিছু সেবা ব্যতীত অন্য কোন যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা নিশ্চিত করণ কাজে সার্বক্ষণিক আছি।
বাংলাদেশ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা ছিল শুরু থেকেই হাইওয়ে কন্ট্রোলের জন্য৷ হাইওয়ে কন্ট্রোল করতে পারলে, সচেতনতা বৃদ্ধি করতে পারলে করোনা ভাইরাস ঠেকানো সম্ভব। যেহেতু এখন অব্ধি এই ভাইরাসের কোন ভ্যাক্সিন আবিষ্কার হয়নি সেহেতু এই ভাইরাসের প্রতিকার হিসেবে নিজেদের সতর্কতা অবলম্বন ছাড়া বিকল্প নাই।
ঢাকা রেঞ্জের আমাদের সকলের শ্রদ্ধেয় অভিভাবক , বাংলাদেশ পুলিশের জীবন্ত কিংবদন্তী, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি, জনাব হাবিবুর রহমান বিপিএম(বার), পিপিএম(বার) মহোদয় এবং নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার জনাব মোহাম্মদ জায়েদুল আলম,পিপিএম(বার) মহোদয়ের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।
আপনাদের জরুরি সেবা, খাদ্য নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ পুলিশ অক্লান্তভাবে পরিশ্রম করে যাচ্ছে৷ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে দিনের পর দিন এই সমস্যা নিরসনে কাজ করে যাচ্ছি৷ এক দিনে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ অন্যদিকে মহাসড়ক নিয়ন্ত্রণ। আপনাদের কাছে অনুরোধ জানাই প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হবেন না। বাসায় থাকুন। নিরাপদ থাকুন৷ নিজের পরিবার কে নিরাপদ থাকুন।
লেখক: অতিরিক্ত পুলিশ সুপার
নারায়নগঞ্জ ‘খ’ সার্কেল।