ফারুক আল শারাহ:
কুমিল্লার মনোহরগঞ্জের প্রথম করোনা জয়ী হলেন ৫৫ বছর বয়সী এক বৃদ্ধ। নিয়মিত ওষুধ সেবন ও পরামর্শ মেনে চলায় মাত্র ১৫দিনেই তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ হয়েছেন। করোনা জয়ী বৃদ্ধকে উপজেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্যবিভাগ গঠিত র্যাপিড রেসপন্স টিমের পক্ষ থেকে উপহার সামগ্রী দিয়ে অভিনন্দন জানানো হয়েছে।
কুমিল্লা জেলা করোণা সংক্রমণ প্রতিরোধ সমন্বয়ক ও মনোহরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নিসর্গ মেরাজ চৌধুরী জানান, করোনা আক্রান্ত ওই রোগী আমাদের র্যাপিড রেসপন্স টিমের মনিটরিং প্লাস ট্রিটমেন্টে ছিল। প্রথমদিনই আমাদের চিকিৎসকদের একটি টিম তাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এবং আমার সুপারভিশনে তাকে রোগ প্রতিরোধ বৃদ্ধিমূলক কিছু ওষুধ দেয়া হয় । তার সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হয়, যেন ঠিকভাবে ওষুধ সেবন করেন। নিয়মনীতি মেনে চলায় তিনি দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেছেন।
জানা যায়, মনোহরগঞ্জ উপজেলার প্রথম করোনা আক্রান্ত ওই ব্যক্তির বাড়ি উপজেলার মৈশাতুয়া গ্রামে। ৫৫ বছর বয়সী বৃদ্ধ ওই ব্যক্তি ঢাকায় ডিমের আড়তে চাকুরি করতেন। তিনি ঢাকা থেকে নিজ বাড়িতে আসার পর করোনার উপসর্গ দেখা দেয়। খবর পেয়ে তাৎক্ষনিক উপজেলা স্বাস্থ্যবিভাগ কর্তক গঠিত র্যাপিড রেসপন্স টিম তার নমুনা সংগ্রহ করে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিয়ে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশনা দেন। এরই মধ্যে গত ২৪ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) রাতে আইসিডিআর থেকে প্রেরিত রিপোর্টে তার করোনা পজেটিভ আসে।
তাৎক্ষনিক উপজেলা স্বাস্থ্যবিভাগ গঠিত র্যাপিড রেসপন্স টিম তাকে হোম আইসলোশানে নিবিড় পর্যবেক্ষণে নিয়ে চিকিৎসা শুরু করেন। তিনি নির্দেশনা মোতাবেক ওষুধ সেবন ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলায় মাত্র ১৫দিনের মধ্যেই সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠেন। চিকিৎসকরা সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করায় ওই বৃদ্ধের পরিবারের অন্য কোন সদস্য করোনা আক্রান্ত হননি। ইতোমধ্যে সকলের রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে।
মনোহরগঞ্জে করোনা আক্রান্ত প্রথম রোগী দ্রুততম সময়ে সুস্থ হয়ে ওঠায় স্থানীয় প্রশাসন ও স্বাস্থ্যবিভাগ গঠিত র্যাপিড টিমের মধ্যে আনন্দ দেখা দেয়। শুক্রবার উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহেল রানা, স্বাস্থ্যবিভাগের পক্ষে র্যাপিড রেসপন্স টিমের অন্যতম সদস্য আর.এম.ও ডা. যুবায়ের, ডা. নওরিন করোনা জয়ী ওই বৃদ্ধের বাড়ি গিয়ে তাকে উপহার সামগ্রী প্রদান করেন। এসময় এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে তাদেরকে অভিনন্দন জানান স্থাণীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল।
কুমিল্লা জেলা করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ সমন্বয়ক ও মনোহরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নিসর্গ মেরাজ চৌধুরী আরো বলেন, করোনা আক্রান্ত একজন ব্যক্তির মৃত্যুও আমাদের কাম্য নয়। সকলে সুস্থ্য হলে সফলতা চিকিৎসকদের। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করি করোনা আক্রান্ত রোগীদের দ্রুত সুস্থ করে তুলতে। এক্ষেত্রে যারা নিয়মনীতি মেনে ওষুধ সেবন ও পরামর্শ মেনে চলেন তারা সুস্থ হয়ে ওঠছেন। রোগীদের দ্রুত সুস্থ হতে ধৈর্য্য ও সাহসিকতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে বলেও তিনি জানান।