স্টাফ রিপোর্টার: বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (বিজিডিসিএল) বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। আউটসোসিং ব্যবস্থায় বিভিন্ন সেবার বিপরীতে জনবল সরবরাহের ঠিকাদার নিয়োগের দরপত্র মুল্যায়ন হওয়ায় প্রতিষ্ঠান মিথ্যা অভিযোগের তদন্ত কমিটি সত্যাতা রিপোর্ট বোডের্র কাছে না দিয়ে পূনরায় ঠিকাদার নিয়োগ করার প্রক্রিয়া চালাচ্ছে বিজিডিসিএল মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) টি আই কে এম আবুল হোসাইন।
জানা য়ায়, গত ২২ ও ২৩ অক্টোবর ২০১৯ সালে বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হলে ৬টি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান দরপত্র জমা দেয়। ৭ নভেম্বর ২০১৯ সালে ঢাকা পেট্রোবাংলা বিজিডিসিএল লিয়াজোঁ অফিসে দুপুর ১২টায় পর্যন্ত দরপত্র গ্রহন করা হয় এবং বিকাল ৩টায় ৬টি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের উপস্থিতে উন্মুক্ত করা হয়। ৬টি প্রতিষ্ঠানে মধ্যে দরপত্র প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটির আহবায়ক ছিলেন বিজিডিসিএল (অপাঃ এন্ড মেইন্টে) মহাব্যস্থাপক প্রকৌ: আ.স.ম আকবর কবীর ,সদস্য বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড কুমিল্লা বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২ নির্বাহী প্রকৌশলী পারভেজ আহমেদ,শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর কুমিল্লা জোনের নির্বাহী প্রকৌশলী মো:আলী ইমাম,বিজিডিসিএল কুমিল্লার উপ-মহাব্যবস্থাপক(সংস্থাপন) মোহাম্মদ জাকির হোসেন, বিজিডিসিএল কুমিল্লার মহাব্যবস্থাপক(প্রশাসন) আফরোজ বেগম, বিজিডিসিএল কুমিল্লার মহাব্যবস্থাপক(অর্থ ও হিসাব) নারায়ন চন্দ পাল, বিজিডিসিএল কুমিল্লার মহাব্যবস্থাপক(পরি: ও উন্নয়ন) প্রকৌঃ আবুল হাসনাত। তারা দরপত্রটির শর্ত পূরন সাপেক্ষে দুইটি প্রতিষ্ঠানকে গ্রহণযোগ্য হিসেবে ঘোষনা করেন। (১)গালফ্ সিকিউরিটিজ সার্ভিসেস প্রা: লি: (২) জেনারেশন-৪ সিকিউরিটি ফোর্স।
সূত্র জানায়, গালফ্ সিকিউরিটিজ সার্ভিসেস ও জেনারেশন-৪ সিকিউরিটি ফোর্স ২টি দরদাতার মধ্যে গালফ্ সিকিউরিটিজ সার্ভিসেস প্রাইভেট লিমিটেড সর্বোচ্চ সংখ্যক জনবল সরবারহ করছে এবং তাদের কাজের অভিজ্ঞাতা বেশি এবং দরপত্রের ৪.৫ ধারার শর্তানুযায়ী উক্ত প্রতিষ্ঠাকে তাদের উদ্ধৃত দর কমিশনে (সর্বমোট সেবামূল্যের উপর) কার্যাদেশ প্রদানের জন্য মূল্যায়ন কমিটি সুপারিশ করে। এদিকে দরপত্রের মূল্যায়ন কমিটি যখন বোর্ড কাছে প্রেরক করে তখন ২৩ ডিসেম্বর ২০১৯ সালে মেসার্স এইচ.ভি.এন্টারপ্রাইজ এর স্বত্ত্বাধিকারী মো: মফিজুল ইসলাম জ¦ালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের অতিরিক্তি সচিব (প্রশাসন) ও বিজিডিসিএল পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান বরাবরে একটি অভিযোগ পত্র দাখিল করে। এ দাখিলকৃত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পরিচালনা পর্ষদ ৫৫৪তম সভায় চার সদস্য সমম্বয়ে একটি তদন্ত কমিটি করে দেয়। তদন্ত কমিটি মতামত পর্যবেক্ষন রিপোর্টে জানা যায়, মেমার্স এইচ.বি এন্টারপ্রাইজ দাখিলকৃত দরপত্র সন্নিবেশিত কাগজপত্রাদি সরিয়ে ফেলার বিষয়ে মেমার্স এইচ.বি এন্টারপ্রাইজ এর অভিযোগটি সঠিক নয়। এছাড়া কাগজপত্র সরিয়ে ফেলার কোনো আলামতও পরিলক্ষিত হয়নি। এদিকে তদন্ত কমিটি বোর্ডের রিপোর্ট কাছে পেশ না করে বা পাশ কাটিয়ে জনবল সরবরাহের ঠিকাদার নিয়োগের দরপত্রটি আবার টেন্ডার বাতিল করার প্রক্রিয়া চালাচ্ছে বিজিডিসিএল মহাব্যবস্থাপক (প্রসাশন) ।
বিজিডিসিএল মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) টি আই কে এম আবুল হোসাইন বলেন, আউটসোসিং ব্যবস্থায় বিভিন্ন সেবার বিপরীতে ১৪৫ জন জনবল সরবরাহের ঠিকাদার নিয়োগের দরপত্রটি পেট্রোবাংলার কাছে অভিযোগ ছিল। আমরা টেন্ডার বাতিলের জন্য বোর্ডেও পাঠাবো। এ প্রতিবেদক প্রশ্ন করেন-পরিচালনা পর্ষদ ৫৫৪তম সভায় চার সদস্য সমম্বয়ে একটি তদন্ত কমিটি করেদেয় ওই কমিটির আহবায়ক ছিলেন বিজিডিসিএল কোম্পানী সেক্রেটারিয়েট ডিভিশনের কোম্পানী সচিব এম.এ. হান্নান আজাদ, সদস্য হিসেবে ছিলেন বিজিডিসিএল ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিস ডিভিশনের মহাব্যবস্থাপক (ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিস)চলতি দায়িত্ব-প্রকৌ. আবুল বাশার পেট্রোবাংলার উপ-মহাব্যবস্থাপক (ভিজিল্যান্স) এম নাসিমুল আলীম,সদস্য সচিব ছিলেন বিজিডিসিএল হিসাব ডিপার্টমেন্ট উপ-মহাব্যবস্থাপক(হিসাব) নাসিম ইকবাল। এই তদন্ত কমিটি অভিযোগ কারীর অভিযোগের কোন সত্যাতা পায়নি। এখন কেন আবার রি-টেন্ডার দিবেন। প্রশ্ন পাশ কাটিয়ে তিনি বলেন, বোর্ড সিন্ধান্ত নিবে।
এদিকে তদন্ত কমিটির আহবায়ক বিজিডিসিএল কোম্পানী সেক্রেটারিয়েট ডিভিশন কোম্পানী সচিব এম.এ. হান্নান আজাদ বলেন, মেসার্স এইচ.ভি.এন্টারপ্রাইজ এর স্বত্ত্বাধিকারী মো: মফিজুল ইসলামের অভিযোগটির কোন সত্যাতা তদন্ত কমিটি পায়নি। এ প্রতিবেদক প্রশ্ন করলে এখন কেন আবার রি-টেন্ডার হবে তিনি বলেন,এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। বিজিডিসিএল ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌঃ মোঃ শাহীনুর ইসলামের কাছে মুঠো ফোনে আউটসোসিং ব্যবস্থায় বিভিন্ন সেবার বিপরীতে ১৪৫ জন জনবল সরবরাহের ঠিকাদার নিয়োগের দরপত্রটি আবার রি-টেন্ডার হচ্ছে কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন,এ বিষয় বোর্ড দেখবে। বোর্ড অনুমোদন দিলে রি-টেন্ডার হবে। তখন প্রতিবেদক প্রশ্ন করেন এই কাজের জন্য দুই বার টেন্ডার হয়েছে। এখন আবার কেন রি-টেন্ডার দিবেন।
তিনি বলেন বিষয়টি বোর্ড দেখবে। এ দিকে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে বিভিন্ন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মাঝে। এসব ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের স্বত্ত্বাধিকারীরা জানান,মেসার্স এইচ.ভি.এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মিথ্যা অভিযোগ করে। পরে পেট্রোবাংলা একটি তদন্ত কমিটি করে। তদন্ত কমিটি ওই অভিযোগের কোন সত্যাতা পায়নি। তারা বলেন,একটি টেন্ডার যদি বার বার দিতে থাকে এতে কোম্পানি ও সরকারে বিপুল রাজস্ব ক্ষতি হবে। বোর্ডকে ভুল তথ্য প্রদান করে দরপত্রটি বাতিল করার জন্য প্রস্তুতি চলছে।
তারা অভিযোগ করে বলেন,উক্ত আদেশ অফিস বন্ধ থাকাকালীন ষড়যন্ত্র ও প্রতারনা মূলক অবৈধ ভাবে প্রভাবিত হয়ে বেআইনী যোগাযোগের মাধ্যমে উদ্দেশ্য প্রনোদিত হয়ে দরপত্রটি রি-টেন্ডারে প্রক্রিয়া চালাচ্ছে। বিদ্যুৎ জ¦ালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রনালয় খনিজ সম্পদ বিভাগ, পেট্রোবাংলা,এবং বিজিডিসিএল বোর্ড পরিচালক মন্ডলির প্রতি বিশেষ অনুরোধ জানিয়ে ঠিকাদাররা বলেন উক্ত দরপত্র বিষয়ে সরজমিনে তদন্ত সাপেক্ষে দোষী কর্মকর্তাদের বিরূদ্ধে আইনী ব্যবস্থা এবং বার বার টেন্ডার না দিয়ে যে সকল ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ পাওয়ার যোগ্যতা রাখে সে মূল্যায়নে মাধ্যেমে উক্ত ঠিকাদারকে কার্যাদেশ প্রদান করে কাজ করার সুযোগ দেওয়ার অনুরোধ করেন।
জেনারেশন-৪ সিকিউরিটিজ ফোর্স স্বত্ত্বাধিকারী মাহফুজ বলেন,এই দরপত্রে জন্য বিজিডিসিএল দুইটি কোম্পানি কে গ্রহনযোগ্য হিসেবে ঘোষনা করে। বিজিডিসিএল এ দরপত্রটি দুই বার রি-ডেন্টার করে। দ্বিতীয় বার রি-টেন্ডারে আমরা দরপত্র প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেই। দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি আমাদেরকে গ্রহনযোগ্য ঘোষনা দেয়। ৬ মাস হয়ে গেলেও এখনো বিজিডিসিএল কোন সিন্ধান্ত দিতে পারছে না। দরপত্র নিয়ম অনুযায়ী ১২ লাখ টাকা আমাদের জমা দেওয়া আছে। এভাবে টাকা আটকে থাকলে আমাদের ব্যবসা করতে কষ্ট হচ্ছে।
গালফ্ সিকিউরিটিজ সার্ভিসেস প্রা: লি: ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান জানান, আমাদের প্রতিষ্ঠান সুনামে সাথে বাংলাদেশের বিভিন্ন বড় বড় প্রতিষ্ঠানের সাথে কাজ করছে। বিজিডিসিএল-এর আউটসোসিং ব্যবস্থায় বিভিন্ন সেবার বিপরীতে ১৪৫ জন জনবল সরবরাহের ঠিকাদার নিয়োগের দরপত্র দাখিলের পর এই প্রতিষ্ঠানের কাগজ পত্রের যাচাই বাইছের করে এ প্রতিষ্ঠানকে ১ নাম্বার হিসেবে তালিকায় রাখে। এখন কেন বিজিডিসিএল কাজ দিচ্ছে না এ বিষয়ে কিছু বলতে পারব না। সূত্র জানায়,এ দরপত্রটি নিয়ে হাইকোটে মামলার পক্রিয়া চলছে বলে জানা যায়।