ফারুক আল শারাহ:
কুমিল্লার লাকসামে করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় সাফল্য আসছে। উপজেলা স্বাস্থ্যবিভাগের করোনা র্যাপিড রেসপন্স টিমের আন্তরিকতাপূর্ণ সেবায় রোগীরা দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠছেন। ইতোমধ্যে একই পরিবারের চারজন সহ ৬ জন সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে করোনা জয় করেছেন। এখানে এ পর্যন্ত ১৪ জন আক্রান্ত হলেও এখনও কেউ মারা যায়নি। এতে স্থানীয়দের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
জানা যায়, দেশে করোনার প্রভাব শুরু হওয়ার পর থেকেই লাকসাম উপজেলা স্বাস্থ্যবিভাগের করোনা র্যাপিড রেসপন্স টিম মানবিক সেবা দিয়ে আসছে। উপজেলার যেখানেই কারো মধ্যে করোনা উপসর্গের খবর পেয়েছেন সেখানেই তারা তাৎক্ষনিক ছুটে গিয়েছেন। নমুনা সংগ্রহের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিয়ে হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করেছেন। উপজেলায় এ পর্যন্ত ২৬৩ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ২৪৯ জনের রিপোর্ট পাওয়া গেছে এবং ১৪ জনের রিপোর্ট প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এখানে একই পরিবারের ৮জন সহ সর্বমোট ১৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে ১৩জনই পৌরশহরের এবং একজন ইউনিয়ন পর্যায়ের বাসিন্দা। করোনায় আক্রান্তদের নমুনা সংগ্রহ করতে গিয়ে একজন মেডিকেল টেকনোলজিষ্টও আক্রান্ত হয়ে বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের করোনা ওয়ার্ডে আইসলোশানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
করোনা র্যাপিড টিমের সদস্য ডা. আবদুল মতিন জানান, আক্রান্ত ১৪ জনের মধ্যে উপজেলার গোবিন্দপুর ইউনিয়নের দোখাইয়া গ্রামের প্রথম রোগী এবং পৌরসভার উত্তর লাকসাম বেলতলি এলাকার একটি মসজিদের অস্থায়ী মুয়াজ্জিন দ্বিতীয় রোগী এবং সাহাপাড়ার একই পরিবারের ৪ জনসহ মোট ৬ জন সুস্থ হয়েছেন। তাদের মধ্যে শুধুমাত্র দুইজনকে হাসপাতালে আইসলোশানে নিয়ে এবং অন্যদের হোম আইসলোশানে রেখেই চিকিৎসা করা হয়। করোনা থেকে সুস্থ হওয়া ৬ জনকে আইসলোশান থেকে স্থানান্তরিত করে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
স্থানীয় স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও সচেতন মহল জানান, লাকসামে ১৪ জনের মধ্যে ৬জন দ্রুত সুস্থ হওয়ার খবর স্বস্তিকর। র্যাপিড রেসপন্স টিমের আন্তরিক ও মানবিক সেবাতেই এমন সাফল্য অর্জিত হয়েছে। তাদের নিবিড় পর্যবেক্ষণ সকলের নজর কেঁড়েছে। করোনা ঝুঁকি নিয়ে তারা যে ভূমিকা রেখে যাচ্ছেন তা অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
লাকসাম উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ও করোনা র্যাপিড রেসপন্স টিমের প্রধান ডা. মোহাম্মদ আবদুল আলী বলেন, করোনা সংক্রমন ঠেকাতে উপজেলা প্রশাসন এবং স্বাস্থ্য বিভাগ কঠোর পরিশ্রম করছেন। কিন্তু জনসাধারণ এখনো অনেকটা অসচেতন। তারা সামাজিক দূরত্ব মেনে চলছেন না। ঈদকে সামনে রেখে হাট-বাজারে মানুষ অবাধে বিচরণ রয়েছে। যা করোনা সংক্রমনের জন্য অত্যন্ত ঝুঁঁকিপূর্ণ। তিনি স্বাস্থ্যবিধি মেনে সবাইকে বাসা-বাড়িতে থাকার পরামর্শ দেন।