ফারুক আল শারাহ:
কুমিল্লা-লাকসাম-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কে মহাদূর্ভোগ দীর্ঘদিনের। এ সড়কটিকে ফোরলেনে উন্নীতকরণের কাজ ২০২০ সালের জুনের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও নির্দিষ্ট সময় পার হয়ে গেলেও কাজের সন্তোষজনক অগ্রগতি নেই। এতে বছরের পর বছর কুমিল্লা, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর জেলার মানুষকে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সড়কটির ফোরলেনের কাজের ধীরগতির বিষয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদফতরের কুমিল্লা জোনের উন্নয়ন প্রকল্প সমূহের অগ্রগতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে মন্ত্রী তার বক্তব্যে অসন্তোষের কথা জানান দেন।
প্রকৌশলীদের উদ্দেশে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে বসে না থেকে সরেজমিন প্রকল্প এলাকায় গিয়ে কাজ করুন, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করতে হবে। জনদুর্ভোগ সহ্য করা হবে না, কোনো অজুহাত নয়।
তিনি আরো বলেন, নিষেধ করার পরও কেন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে ময়লা-আবর্জনা ও পোস্টার-ব্যানার রয়েছে। এসব পোস্টার ব্যানার যারই হোক না কেন তা সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেন মন্ত্রী।
গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচল করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সবার জন্য মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে হবে। যানবাহনে দাঁড়িয়ে যাত্রী নেয়া যাবে না।
ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেন সওজ এর কুমিল্লা জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী শওকত আলী, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী রানা প্রিয় বড়ুয়া, নোয়াখালীর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবদুর রহিম, কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী ড. মো. আহাদ উল্লাহ, নোয়াখালীর নির্বাহী প্রকৌশলী বিনয় কুমার পাল, লক্ষ্মীপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী শুভ্রত দে, ফেনীর নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান উদ্দিন আহমেদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী পঙ্কজ কুমার ভৌমিক, চাঁদপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী মনোয়ারুল ইসলাম, কুমিল্লা বিআরটিএর সহকারী পরিচালক আবু আশরাফ সিদ্দিকী মান্নান।
এছাড়াও ঢাকা থেকে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মো. নজরুল ইসলাম, প্রধান প্রকৌশলী কাজী শাহরিয়ার হোসেনসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত ছিলেন।
সওজ এর কুমিল্লা জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী শওকত আলী বলেন, কুমিল্লা জোনে ২৫০০ কিলোমিটার ও কুমিল্লা জেলায় ১৭৮২ কিলোমিটার রাস্তা রয়েছে। কুমিল্লা টমছমব্রিজ-নোয়াখালী ফোর লেন সড়কের নির্মাণ কাজের চারটি প্যাকেজের মধ্যে লালমাই-লাকসাম প্যাকেজের কাজ সময়মত শুরু করা যায়নি। এ প্যাকেজের এলাইনমেন্ট পরিবর্তন সিদ্ধান্তহীনতার জন্য কাজের টেন্ডার আহ্বান করতে দেরি হয়েছে। এক মাস আগে কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে। আশা করি যথা সময়ে উক্ত প্যাকেজের কাজ সম্পন্ন হবে।
উল্লেখ্য, কুমিল্লা-লাকসাম-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কটি ২ হাজার ১৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে চার লেনে উন্নীত করার কাজ চলছে। ২০১৮ সালের ২২ সেপ্টেম্বর চার লেনে উন্নীত করার কাজ উদ্বোধন করা হয়। ২০২০ সালের জুনের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স তাহের ব্রাদার্স, রানা বিল্ডার্স ও হাছান টেকনো বিল্ডার্স লিমিটেড যৌথভাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। নির্দিষ্ট সময় পার হয়ে গেলেও কাজের সন্তোষজনক অগ্রগতি নেই।
সড়কের লাকসাম থেকে লালমাই পর্যন্ত প্যাকেজের এলাইনমেন্ট পরিবর্তন সিদ্ধান্তহীনতার জন্য কাজের টেন্ডার হয়েছে অল্প কয়েকদিন আগে। এতে এ অংশে বড় বড় গর্তের সৃষ্টির হয়ে গণপরিবহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে। ঝুঁকিপূর্ণ সড়কে চলাচলকারী কুমিল্লা, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরের মানুষকে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।