স্টাফ রিপোর্টার: ভোটারদের দরজায় কড়া নাড়ছে লাকসাম পৌরসভা নির্বাচন। সবকিছু ঠিক থাকলে চলতি বছরের ডিসেম্বর অথবা আগামী বছরের শুরুতেই হতে পারে পৌরবাসীর বহুল কাঙ্খিত এই নির্বাচন। ইতিমধ্যেই পৌর শহরের পাড়া মহল্লায় লাকসাম পৌরসভা নির্বাচন নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর সমর্থন নিয়ে মেয়র কাউন্সিলর পদে প্রার্থী হতে মাঠ পর্যায়ে অনেকেই প্রস্তুতি নেয়া শুরু করেছেন। সম্ভাব্য অনেক প্রার্থী তাদের নিজেদের অনুসারী বা কর্মী সমর্থক দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার প্রচারণা শুরু করেছেন। দলের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে সাজা সহ নানান কারনে জাতীয় রাজনীতিতে কোনঠাসা থাকা বিএনপি ইতিমধ্যেই ঘোষণা দিয়েছে তারা দেশের সকল নির্বাচনেই অংশ নিবে। দলের এমন সিদ্ধান্তে দেশের প্রথম শ্রেণির লাকসাম পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপির সমর্থন নিয়ে মেয়র/কাউন্সিলর পদে প্রার্থী হতে অনেকেই লবিং শুরু করছেন। তাদের মধ্যে অন্যতম এবং এ অঞ্চলের তৃণমুল বিএনপির পছন্দের প্রার্থী হচ্ছেন লাকসাম পৌরসভা বিএনপির সাবেক সভাপতি, বৃহত্তর লাকসাম বিএনপিতে রাজনৈতিকভাবে বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী আবুল হাসেম মানু।
তিনি ১৯৭৭ সালে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান প্রতিষ্ঠিত জাগদল থেকেই জাতীয়তাবাদী রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। পরবর্তীতে ৭৮ সালের ১লা সেপ্টেম্বর বিএনপি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর তিনি এদলের রাজনীতিতে সরাসরি যুক্ত হন। ৭৯’র ১ রা জানুয়ারি বিএনপির ভ্যানগার্ড খ্যাত অন্যতম সহযোগী সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাতা তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সরাসরি অনুপ্রেরণায় তিনি বৃহত্তর লাকসাম উপজেলা ছাত্রদলের দায়িত্ব নেন। এক সময়ের লাকসাম, মনোহরগঞ্জ, নাঙ্গলকোট, লালমাই, সদর দক্ষিন উপজেলা নিয়ে থাকা ২৭ ইউনিয়নের বৃহত্তর লাকসাম থানা ছাত্রদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন আবুল হাসেম মানু। কর্মজীবনে এসে ১৯৯০ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত বারবার নির্বাচিত হয়ে সফলতার সহিত তিনি দীর্ঘসময় বৃহত্তর লাকসাম উপজেলা যুবদলের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন।
৯৬’র ১২ জুনের জাতীয় নির্বাচনে বিএনপির অনেক রাঘববোয়াল নেতারা ‘প্রজাপতি’ হলেও আবুল হাসেম মানু টাকার কাছে বিক্রি না হয়ে বিএনপি প্রার্থীর ‘সেনাপতি’ হয়ে দলের নেতাকর্মীদের নিয়ে ধানের শীষের নির্বাচন করেছেন।
১৯৯৯ সালে প্রয়াত লাকসাম উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি ইঞ্জিয়ার আবু নাছের ভুঁইয়ার কমিটিতে বৃহত্তর লাকসাম উপজেলা বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্বে এসে এঅঞ্চলের বিএনপিকে শক্তিশালী করতে উল্লেখযোগ্য ভুমিকা পালন করেন আবুল হাসেম মানু।
২০০১ সালের শুরুতে তিনি লাকসাম পৌরসভা বিএনপি’র সদস্য সচিব মনোনীত হন। ওই বছর ১ অক্টোবর জাতীয় নির্বাচন পরবর্তী সময় থেকে নানান প্রতিকূলতা আর ষড়যন্ত্রে আবুল হাসেম মানু দলের নেতৃত্বের বাহিরে থাকলেও তিনি কখনো বিএনপিকে ছেড়ে যাননি। কুচক্রীদের ষড়যন্ত্রে বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালীন ওই সময়ে বিনা অপরাধে আবুল হাসেম মানুকে কারাবরণ করতে হয়েছে। দলের কঠিন দু:সময়ে ২০১৭ সালে আবুল হাসেম মানু পুনরায় লাকসাম বিএনপির নেতৃত্বে আসেন। ২০১৭-২০১৯ পর্যন্ত তিনি অত্যন্ত সফলতার সহিত লাকসাম পৌরসভা বিএনপির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। লাকসামে দলের অভ্যন্তরীণ বিরোধ মিটানোর স্বার্থে তাঁর কমিটির মেয়াদ থাকা সত্ত্বেও গত বছর ডিসেম্বরে নিজের সভাপতির পদ ছেড়ে রাজনৈতিক মহানুভবতার পরিচয় দিয়েছেন আবুল হাসেম মানু। বর্তমানে তিনি লাকসাম পৌরসভা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সম্মানিত সদস্য। একজন সফল ব্যবসায়ী হিসাবেও দক্ষিণ কুমিল্লা তথা বৃহত্তর লাকসামে যথেষ্ট সুনাম রয়েছে আবুল হাসেম মানুর। উত্তর লাকসামে বৃহত আকারের মৌসুমী অটো রাইচ মিলের স্বত্বাধিকারী তিনি।
বৃহত্তর লাকসাম বিএনপি’র বিভিন্ন দুর্যোগকালীন সময়ে আবুল হাসেম মানু অত্যন্ত সাহসিকতার সহিত দলের অনেক গুরুত্বপুর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। দল করতে গিয়ে একাধিক মামলারও আসামী হয়েছেন তিনি।
নির্বাচন নিয়ে একান্ত আলাপচারিতায় আবুল হাসেম মানু সময়ের দর্পণকে বলেন, ‘দলের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই আমি বিএনপি’র রাজনীতির সাথে জড়িত। বর্তমানে লাকসাম পৌরসভায় আমাদের দলের অবস্থান অতীতের চেয়ে অনেক শক্তিশালী। সুষ্ঠ এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হলে শুধু লাকসাম নয় দেশের যে কোন নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থীর বিজয় ঠেকানোর সাধ্য কারো নেই। জনগণ ভোট কেন্দ্রে যেতে পারলেই বিএনপির বিজয় সুনিশ্চিত। সুষ্ঠু এবং গ্রহণযোগ্য নিয়ে নিয়ে আমার সংশয় আছে, অতীতের নির্বাচন গুলোর দিকে তাকালে নির্বাচন করতে কেউই ইচ্ছা করবেনা। তবে আমার দল বিএনপি আমাকে লাকসাম পৌরসভার মেয়র পদে মনোনয়ন দিলে মৃত্যুঝুঁকি থাকলেও আমি পিছু হটবোনা। শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত নির্বাচনী মাঠে থাকবো ইনশাআল্লাহ।
পৌরসভা বিএনপি’র তৃণমূলের অনেকেরই পছন্দের মেয়র প্রার্থী আবুল হাসেম মানু। তৃণমূল নেতাকর্মীদের অনেকের সাথে কথা বলে জানা যায়, আবুল হাসেম মানু সদা হাসোজ্জল মিষ্টভাষী, কর্মীবান্ধব সৎ ও সাহসী একজন বিএনপি নেতা, তিনি লাকসাম পৌরসভার আসন্ন নির্বাচনে মেয়র পদে নির্বাচন করলে চমক দেখাতে পারবেন।