ফারুক আল শারাহ:
কুমিল্লার লাকসামে নতুন আরো ৬ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। নতুন ৬ জনই নোয়াখালীর চৌমুহনী করোনায় মৃত ব্যক্তির সংস্পশে থাকা আসা করোনায় আক্রান্ত সেই দুই সহোদরের পরিবারের সদস্য। আক্রান্তদের মধ্যে দুই সহোদরের বাবা, মা, দুইজনের দুই স্ত্রী ও বড় সহোদরের ছেলে-মেয়ে রয়েছে। এ পর্যন্ত লাকসামে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ১০ জনে দাঁড়ালো। লাকসাম উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের ‘করোনা র্যাপিড রেসপন্স টিম’ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সূত্রে জানা যায়, গত ২৫ এপ্রিল (শনিবার) শহরের দক্ষিণ লাকসাম সাহাপাড়ার দুই সহোদরের করোনা রিপোর্ট পজেটিভ আসে। তারা একসঙ্গে নোয়াখালীর চৌমুহনীতে একটি ফার্মে চাকুরি করতেন। ওই ফার্মের চাকুরিরত তাদের এক সহকর্মী করোনা আক্রান্ত হলে দুই সহোদরের মধ্যে একজন আক্রান্ত হওয়ার ১০/১১দিন আগে তথ্য গোপন করে লাকসামে এসে শহরের বিভিন্ন স্থানে বিচরণ করেন। সে বাড়ি আসার ৬/৭দিন পর তাদের ওই সহকর্মী করোনায় মারা গেলে ২২ এপ্রিল (বুধবার) অপর ভাইও চৌমুহনী থেকে লাকসামে চলে আসেন। এসময় পরিবারের লোকজন তাকে বাসায় প্রবেশ বাধা দিলে সে পার্শ্ববর্তী বাড়ি গিয়ে গোসল করে ওই পরিবারের সংস্পর্শে যান। খবর পেয়ে তাৎক্ষনিক উপজেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ তাদের ও আশে-পাশের তিনটি বাড়ি লকডাউন ঘোষণা করে দুই সহোদরের নমুনা সংগ্রহ করে। গত ২৫ এপ্রিল (শনিবার) আইইডিসিআর থেকে প্রেরিত রিপোর্টে দুই সহোদরের করোনা পজেটিভ আসায় লাকসাম শহর জুড়ে আতঙ্ক আরো বেড়ে যায়।
লাকসাম উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের ‘করোনা র্যাপিড রেসপন্স টিম’ তাৎক্ষনিক দুই পরিবারের ১৩ জনের নমুনা সংগ্রহ করে আইইডিসিআরে প্রেরণ করে। আজ বুধবার সকালে তাদের মধ্যে ৬ জনের রিপোর্ট পজেটিভ আসে। তারা সকলেই ওই দুই সহোদরের পরিবারের সদস্য। আক্রান্তদের মধ্যে রয়েছেন, দুই সহোদরের ৭২ বছর বয়সী বাবা, ৬০ বছর বয়সী মা, ৩৬ বছর বয়সী বড় সহোদরের স্ত্রী, ১৪ বছর বয়সী কন্যা, ১২ বছর বয়সী পুত্র সন্তান এবং ছোট সহোদরের স্ত্রী ২৬। দুই সহোদরের মধ্যে বড় ভাইয়ের বয়স ৪২ বছর ও ছোট ভাইয়ের বয়স ৩৬ বছর। লাকসামে এখন পর্যন্ত একই পরিবারের ৮জন সহ সর্বমোট ১০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে।
লাকসাম উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের ‘করোনা র্যাপিড রেসপন্স টিম’ এর অন্যতম সদস্য ডা. আবদুল মতিন একই পরিবারের নতুন ৬ জন আক্রান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, দুই সহোদরের সংস্পর্শে থাকা দুই পরিবারের ১৩ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ৯ জনের রিপোর্ট এসেছে, যাদের ৬ জনের রিপোর্টই পজেটিভ। বাকী ৪ জনের রিপোর্ট এখনো আসেনি বলে তিনি জানান।
লাকসাম উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আবদুল আলী বলেন, অতি প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাসা-বাড়ির বাইরে যাবেন না। সকলেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাসা-বাড়িতে নিরাপদে থাকুন। আপনাদের স্বাস্থ্যসেবায় আমরা সর্বদা তৎপর রয়েছি।