ডেস্ক রিপোর্ট: অনাবিল চিরায়ত সেই আনন্দ আর নেই। খুশির জোয়ারও নেই। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও থমকে গেছে স্বাভাবিক জীবনযাপন। এমন অবস্থায় দরজায় হাজির হয়েছে ঈদুল ফিতর।
ঈদ মানে আনন্দ। ঈদ মানে খুশি। ঈদ মানে স্বজন আর বন্ধুদের মিলনমেলা, হৈ-হুল্লোড়, ঘুরে বেড়ানো। ঈদ মানে কোলাকুলি, করমর্দন। ঈদ মানে প্রতিবেশীদের নিয়ে খাওয়াদাওয়া, আড্ডা দেওয়া। নাড়ির টানে গ্রামে গিয়ে মা-বাবা, ভাই-বোনদের সঙ্গে একত্র হওয়া। নতুন জামাকাপড় পরা। করোনাভাইরাস ঈদের সকল আননন্দ কেঁড়ে নিয়েছে।
ঈদের নামাজ আমাদের দেশে একটি বড় উৎসব। ছেলে, বুড়ো, পাড়া-প্রতিবেশী সবাই দল বেঁধে ঈদের নামাজ পড়তে ঈদগাহে যায়। নামাজ শেষে একে অপরের সঙ্গে কুশল বিনিময়, করমর্দন, কোলাকুলি করে। কিন্তু করোনার স্বাস্থ্যবিধি এবার সেটা হতে দিচ্ছে না। এবার উন্মুক্ত স্থানে জনসমাগম নেই। স্বাস্থ্যবিধি মেনেই মসজিদে আদায় করতে হয়েছে ঈদের নামাজ। নামাজ শেষে ঈদের সম্প্রীতির বন্ধন করমর্দন ও কোলাকুলি।
ঈদের দিনে আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু, প্রতিবেশীর বাড়িতে যাতায়াত ও খাওয়াদাওয়ার সেই রেওয়াজও নেই। নতুন জামাকাপড় কেনেনি বেশিরভাগ মানুষ। ঈদের মেলা ছিলনা কোথাও। প্রতিবছর শাড়ি মেলা, পাঞ্জাবি মেলাসহ বিভিন্ন প্রকার মেলা বসতো। ছেলে-মেয়ে নিয়ে অনেকেই যেত বিনোদনকেন্দ্রে। এবার সেটাও বন্ধ। প্রকৃতির সৌন্দর্যের সঙ্গে নিজেকে মেলে ধরতে অনেকে ছুটে যায় পর্যটনকেন্দ্রে। কিন্তু এবার দেশের পর্যটনকেন্দ্রগুলোও বন্ধ রয়েছে। সেখানে যাওয়ারও উপায় নেই।
ঈদ সামনে রেখে লাইনে দাঁড়িয়ে ট্রেনের টিকিট কাটা, দূরপাল্লার বাসে টিকিট কাটার জন্য হুড়োহুড়ি, ঈদের আগে যাত্রীবাহী বাস ও ট্রেনের ছাদ ভর্তি মানুষ—এসব দৃশ্য নেই এবার। নেই লঞ্চের ডেকের ওপর ঠাসা যাত্রীর কোলাহল। বন্ধ রয়েছে গণপরিবহন।
টানা প্রায় দুই মাস অফিস-আদালত, কলকারখানা, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, গণপরিবহন বন্ধ থাকায় নিম্ন আয়ের মানুষ পড়েছে বিপাকে। ঘরে খাবার নেই। এই অবস্থায় ঈদ তাদের জন্য বিষাদ হয়ে এসেছে। যদিও ব্যক্তিগত উদ্যোগে দেশের ধনী ব্যক্তি, বিভিন্ন সংস্থা ও সরকারের পক্ষ থেকে ত্রাণ ও ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।
সবমিলিয়ে এবার ঈদ খুশির বার্তা বয়ে আনতে পারেনি। করোনার সঙ্গে ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতির কষ্টের মধ্যেই এবার কাটছে ঈদ। সবার প্রত্যাশা করোনার আঁধার কেটে দ্রুতই স্বাভাবিক হবে জনজীবন।