ডা. এসএম. বখতিয়ার কামাল (চর্ম ও যৌনরোগ বিশেষজ্ঞ): চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় মেছতার ইংরেজি নাম মেলাজমা বা কোলাজমা। এটি নারী-পুরুষ উভয়েই হতে পারে। তবে তুলনামুলকভাবে নারীদের বেশি হয়। সাধারণত ২০ থেকে ৫০ বছর বয়সী নারীর হয়ে থাকে। সাধারণত আমাদের ত্বকের নিচে মেলানিন নামক এক ধরনের রঞ্জক পদার্থ থাকে । কোনো কারণে ত্বকের বিশেষ জায়গায় এটির কার্যক্ষমা বেশি হলে ত্বকের সেই অংশটি পাশ^বর্তী অংশের চেয়ে বেশি গাঢ় হয়ে যায়। ফলে ওই অংশটি কালো বা বাদামি থেকে হালকা বাদামি দেখায়। এর নামই মেছতা।
মেছতা ক্ষতিকারক নয় এটি কোনো অ্যালাজিংও নয়। এটি থেকে ক্যানসারও হয় না। তাই মেছতা ভয়ের কিছু নেই । মেছতায় একটাই ক্ষতি হয় আর সেটা হলো সৌন্দর্যহানি। মেছতা শরীরের যে কোনো জায়গায় হতে পারে। তবে যেসব স্থানে সূর্যের আলো বেশি পড়ে, সেই জায়গায় বেশি হয়। মেছতা হওয়ার উল্লেখযোগ্য কারণ হলো-প্রোটেকশন ছাড়া অতিরিক্ত সূর্যের আলোয় গেলে এটি হয়। সূর্যের আলোই এটির প্রধান কারণ হিসেবে ধরা হয়। হরমোনের তারতম্য ঘটলে যেমন গর্ভাবস্থায় এটি হয়ে থাকে। হরমোন ওষুধ ব্যবহারে বা হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি নিলে। জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল খেলেও হয়। থাইরয়েড হরমোনের তারতম্য ঘটলে মেছতা হতে পারে। বংশগত কারণে হতে পারে।
ত্বক নিয়মিত ভালোভাবে পরিস্কার না করলে মেছতা হয়ে থাকে। মেছতা ত্বকের এক ধরনের রোগ। ত্বকের যেসব সমস্যা বেশি দেখা যায়, তার মধ্যে অন্যতম হলো মেছতা। এটা বিভিন্ন জায়গায় হতে পারে। যেমন-গালে, নাকের ওপরে, থুতনিতে, ওপরের ঠোঁটের ওপরের অংশে, গলায়, ঘাড়ে এমনকি হাতেও হতে পারে।
প্রতিকারের উপায়: মেছতা পুরোপুরি প্রতিকার করা সম্ভব হয় না। তবে অবস্থায় উন্নতি করা যায়। তই মেছতা হলে প্রথমেই একজন ভালো ডার্মাটোলজিস্টকে দেখাতে হবে। সাধারনত চিকিৎসকরা উডস ল্যাম্পের সাহায্যে মেছতা নির্ণয় করে থাকেন। এরপর মেছতার জন্য তারা বিভিন্ন ওষুধের ক্রিম বা জেল দিয়ে থাকেন। যদিও এটি ব্রণের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়, তবু এটি মাঝে মধ্যে মেছতার জন্যও ডাক্তাররা দিয়ে থাকেন। মনে রাখতে হবে, এগুলো কিন্তু ক্রিম বা জেল হিসেবে মুখে মাখতে হয়।
লেখক: সহকারী অধ্যাপক, চর্ম ও যৌনরোগ বিভাগ
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল
চেম্বার: কামাল হেয়ার অ্যান্ড স্কিন সেন্টার, রুম নং ১৭ (৩য় তলা)
গ্রিন সুপার মার্কেট, ফার্মগেট, ঢাকা।
মোবাইল: ০১৭১১-৪৪০৫৫৮, ০১৯১১-৯৫৭৫৫৩