ডেস্ক রিপোর্ট: প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘মাদক, সন্ত্রাস এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান চলছে, অভিযান অব্যাহত থাকবে।’
তিনি বলেন, ‘পরিবারে যদি মাদকাসক্ত সন্তান থাকে তাহলে সেই পরিবার ধ্বংস হয়ে যায়। অনেক ভয়াবহ ঘটনা ঘটে। অনেক মাদকাসক্ত সন্তান মা-বাবা কিংবা ভাইকে হত্যা করে। মাদকাসক্ত সন্তান শুধু একটা পরিবারকে ধ্বংস করে না, এরা দেশের জন্য ক্ষতিকর, সমাজের জন্য ক্ষতিকর। সে কারণে এর বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রেখেছি।’
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, ‘দারিদ্র্য বিমোচন করাই আমাদের লক্ষ্য। ইতোমধ্যে আমাদের গৃহীত পদক্ষেপের ফলে দারিদ্র্যের হার শতকরা ২১ ভাগে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি। এক সময় বাংলাদেশে দারিদ্র্য বলে কিছু থাকবে না। প্রতিটি মানুষের অন্তত তার মৌলিক চাহিদা দুবেলা খাবারের ব্যবস্থা, বাসস্থান, চিকিৎসা ও শিক্ষার ব্যবস্থা করা হবে। সেই লক্ষ্য নিয়েই কাজ করে যাচ্ছি।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পৃথিবীর কোন দেশে পেঁয়াজ পাওয়া যায় সেটা খোঁজ নিয়ে আমরা নিয়ে আসার ব্যবস্থা নিচ্ছি। ইতোমধ্যেই পাঁচ হাজার মেট্রিকটন এলসি খোলা হয়েছে। সেখানে লোক চলে গেছে। কিছু দিনের মধ্যেই চলে আসবে।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের পঞ্চম অধিবেশনের সমাপ্তি অধিবেশনে বক্তব্য দিতে গিয়ে একথা বলেন তিনি। এর আগে পেঁয়াজ নিয়ে কথা বলেন মুজিবুল হক চুন্নু।
তার বক্তব্যের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের এক সংসদ সদস্য বলেছেন- ইন্ডিয়ায় নাকি পেঁয়াজের কেজি আট টাকা। মাননীয় স্পিকার এটা ইন্ডিয়ার একটি স্টেটে। অন্য কোনো স্টেটে তারা সেই পেঁয়াজ যেতে দিচ্ছে না। অন্যান্য জায়গায় ১০০ টাকা রুপি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাদেরই পেঁয়াজের অভাব এবং তারা আমদানি করছে। তারপরও আমার অনুরোধে যেসব এলসি খোলা হয়েছিল সে পেঁয়াজগুলো আমরা আনতে পেরেছিলাম। কিন্তু আমাদের দেশে পেঁয়াজের দাম বাড়ছে। পেঁয়াজ কিন্তু আছে তা দেখা যাচ্ছে। আমরা টানা অভিযান চালিয়েছি। দেখা যাচ্ছে পেঁয়াজ পচে যাচ্ছে। কিন্তু পেঁয়াজ বাজারে ছাড়ছে না। এ জন্য আমরা টিসিবির মাধ্যমে বিভিন্ন অঞ্চলে পেঁয়াজ বিক্রি করছি। পাশাপাশি আমরা বিদেশ যেমন তুরস্ক ও মিশর থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু করেছি। সেখানে আমাদের কর্মকর্তারা চলে গেছেন।
তিনি বলেন, আমি নির্দেশ দিয়েছি আসার সাথে সাথেই জেলায় জেলায় ট্রাকে করে চলে যাবে। এ ব্যাপারে আমরা যথেষ্ট সচেতন আছি যাতে এই সমস্যাটা না হয়।
তিনি বলেন, আমাদের দেশে আসলে শুধুমাত্র একটি মৌসুমে পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। ১২ মাস যাতে হতে পারে সেভাবে উদ্ভাবন করেছেন আমাদের বিজ্ঞানীরা। আমরা ভবিষ্যতে এই পেঁয়াজের বীজ বাজারজাত করব। সে সময় আর কারও মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হবে না। আমাদের নিজের চাহিদা আমরা নিজেরাই উৎপাদন করতে পারব।
ট্রেন দুর্ঘটনা নিয়ে বিরোধী দলের নেতার বক্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুর্ঘটনা দুর্ঘটনাই। কুয়াশার কারণে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় রেল দুর্ঘটনায় কিছু মানুষ মারা গেছে। সঙ্গে সঙ্গে আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে আমরা আছি। উল্লাপাড়ায় আরেকটি দুর্ঘটনা ঘটেছে। কিছু মানুষ আহত হয়েছে। এসব দুর্ঘটনার পেছনে কোনো চক্রান্ত বা দূরভিসন্ধি আছে কিনা, তা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব। কারণ দেশে একটা ঘটনা ঘটার পর পরই আরও ঘটনা ঘটে। এর পেছনেও কিছু আছে কি না, তা খুঁজে বের করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বিএনপির আমলে রেল যোগাযোগ সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। আমরা রেল যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আধুনিক করে দিচ্ছি। রেলে জনবল নিতে হবে, প্রশিক্ষণও দিতে হবে। তবে একটা-দুটো ট্রেন দুর্ঘটনার কারণে যদি ট্রেন বন্ধ করতে হয়, তবে গাড়ি দুর্ঘটনার পর কি গাড়িও বন্ধ করে দিতে হবে? কোথায় কখন মেট্রোরেল দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে আমরা তৈরি করা বন্ধ করে দেব? বিমানও ক্র্যাশ হয়, আবার হারিয়েও যায়। তবে কি বিমানও বন্ধ হয়ে যাবে। কেউ তো বিমানে চলাচল বন্ধ করেনি। সময় ও গতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গেলে আধুনিক প্রযুক্তি নিয়ে অবশ্যই চলতে হবে।