প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে (বিএসএমএমইউ) এসে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে দেখে যাওয়ার আহবান জানিয়েছেন বিএনপির ৪ জন সংসদ সদস্য।
বুধবার (২ অক্টোবর) বিকেল পৌনে ৩ টার দিকে তারা ফুলের তোরা নিয়ে বিএসএমএমইউ হাসপাতালের খালেদা জিয়ার চিকিৎসাধীন ইউনিটে প্রবেশ করেন। বাইরে অপেক্ষা করছেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।
খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাত করেন ৪ সংসদ সদস্য হলেন- ঠাকুরগাঁও-৩ আসনের এমপি জাহিদুর রহমান জাহিদ, বগুড়া-৬ আসনের এমপি জিএম সিরাজ, বগুড়া-৮ আসনের মোশাররফ হোসেন এবং সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা। প্রায় এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সময় কাটান তারা।
পরে বের হয়ে সাংবাদিকদের জিএম সিরাজ বলেন, আজ ১৮ মাস হলো দেশনেত্রী একটা সাজানো মামলায় ফরমায়েশি রায়ে বন্দি। ম্যাডাম জিয়ার শারিরীক অবস্থার বিষয়ে ইতিমধ্যে নেতৃবৃন্দ দেশবাসীকে জানিয়েছেন। অত্যন্ত অমানবিকভাবে আজকে ম্যাডামকে বন্দী করে রাখা হয়েছে। তার শরীর অবশ হয়ে গেছে। হাত পা চালাতে পারেন না। মাথার চুল নিজে আচড়াতে পারেন না। বাথরুমে নিজে যেতে পারেন না। সবকিছুতেই অন্যের সাহায্য নিয়ে করতে হয়। আমি এবং আমরা যারা সাতজন সংসদ সদস্য রয়েছি সাংবাদিকদের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং সংসদ নেতার কাছে বলতে চাই, আপনি নিজে একবার আসুন। আপনি দেখে যান এই দেশের তিন তিনবারের প্রধানমন্ত্রীকে। আমরা নিশ্চিত আপনি যদি বেগম খালেদা জিয়াকে দেখেন তাহলে, আপনার মানবিক বোধ জাগ্রত হবে। আপনার মায়া হবে। আমরা বিশ্বাস করি ওনি রাজনৈতিক বন্দি। তাই ওনার জামিনের জন্য রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত দরকার। আপনি আমলাতান্ত্রিক পরামর্শ না নিয়ে রাজনৈতিক দুরদর্শিতায় আপনি ওনার জামিনের ব্যবস্থা করে দিন। রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ছাড়া ম্যাডামের মুক্তি হবে না। আমরা সংসদ সদস্য হিসেবে আপনি সংসদ নেতার কাছে আমাদের অনুরোধ আপনি খালেদার জিয়ার মুক্তির পদক্ষেপ নিন।
ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেন, ওনার অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক। ওনার ডায়াবেটিস খালি পেটেও ১১ থেকে ১২ এর নিচে নামছে না। ওনি মাত্র দুই বেলা খেতে পারেন। তাও সামান্য। তার শারিরীক অবস্থা এতোটাই নাজুক যে ওনি হাত নাড়তে পারছেন না। কোন সাহায্য ছাড়া নিজে চলতে পারছেন না। এছাড়া ওনার এখানে সেরকম কোন চিকিৎসাও হচ্ছে না। বিশেষায়িত হাসপাতালে ওনার চিকিৎসা প্রয়োজন। ওনার শারিরীক অবস্থা এবং বয়সের অবস্থা আমরা যেটা দেখলাম সেটা সত্যিই দুঃখজনক।
এর আগে মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) বিকেলে বিএনপির তিন সদস্যের সংসদীয় প্রতিনিধি দল খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করেন। তারা হলেন- চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য হারুন অর রশীদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের সংসদ সদস্য উকিল আব্দুস সাত্তার ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য আমিনুল ইসলাম।
গতকাল হাসপাতালে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাথে দেখা করে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় তার অসুস্থতার কথা বর্ণনায় কান্নায় ভেঙে পড়েন হারুন অর রশিদ এমপি।
কাঁন্নজড়িত কন্ঠে হারুন অর রশীদ বলেন, খালেদা জিয়া চরম জুলমের শিকার। তিনি কী কষ্টে আছেন তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। এই জুলুম থেকে যেন আল্লাহ পাক তাকে মুক্ত করে এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
হারুন অর রশিদ বলেন, দেশবাসীর কাছে উনি দোয়া চেয়েছেন। বিদেশে চিকিৎসা দরকার। উন্নত বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসা দরকার। সুযোগ দিলে তো অবশ্যই বিদেশে যাবেন। আজকে জামিন পেলে কালই বিদেশে যাবেন।