অ্যাড. তানজিনা:
বাংলাদেশের একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে বর্তমান পরিস্থিতির আলোকে আমি আমার ব্যক্তিগত অভিমত পেশ করছি- করোনা ভাইরাস আবির্ভাব হওয়ার পর থেকে, আমার টাইম লাইনের প্রতিটি পোস্ট দেখার পর দেশপ্রেমিক প্রতিটি বিবেক সম্পন্ন মানুষ তাদের মন্তব্য ব্যক্ত করবেন, আশা করি। প্রথম থেকেই যখন দরিদ্র মানুষের জন্য চাল, ডাল, তেল সহ যাবতীয় দ্রব্যাদি চুরির এক মহাসমারোহ শুরু হলো তখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার ঘোষণা ছিলো, “কেউ ত্রাণের জিনিসপত্র নিয়ে দূর্নীতি করলে, আমি বরদাস্ত করবোনা।” তারপর মাননীয় স্থাণীয় সরকার মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম বললেন, “ত্রাণের চাল চোরদেরকে ছাড় দেয়া হবেনা।” এরপর তিনি জনপ্রতিনিধিদেরকে বরখাস্ত, জেল, জরিমানাও করলেন। কিন্তু আশানুরূপ ফল এলোনা।
তাছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে শুরু করে, বিভিন্নভাবে দূর্নীতিবাজদেরকে সম্মানহানিও করা হলো। কিন্তু চোরায় না শুনে ধর্মের কাহিনি! অদ্যাবধি, দূর্নীতিবাজদের দূর্নীতি বন্ধ হচ্ছেনা। কোন কালে, কোন দেশেই খারাপ মানুষদের দৌরাত্ম্যের মূল উৎপাটন করা সম্ভব হয়নি। এরা ইতিহাস হয়েই বেঁচে আছে । আজকের এই দিনে, একা শেখ হাসিনার লড়াই দেখে আমাদের কষ্ট হয়। টিভি চ্যনেলের টকশোতে যারা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গালগল্পে মেতে থাকতেন, জাতির এই দুর্দিনে তারা এখন উধাও।
যাক সেদিকে আর যাচ্ছিনা, দেশটাকে তো বাঁচাতে হবে। এটা একা প্রধানমন্ত্রীর দেশ নয়; আমার, আপনার, সকলের। শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশের কারণে, সকল দূর্নীতিবাজদের সাথে অহরহ মানুষের সাক্ষাত হয়। তাই অনেকেই বলে, দেশে চোর বেড়ে গেছে। কথাটা মোটেই ঠিক নয়। চোর ছিলো, আছে, থাকবে। দেখতে মানুষের মতো হলেও এরা সবাই মানুষ নয়!
যে কথাটি বলতে চেয়েছিলাম, যেহেতু চোর তার স্বভাব পাল্টাতে পারবেইনা, সেহেতু যে টাকার জন্য সে চুরি করে, সেই জরিমানার টাকাটা মনে হয় অনেক কম, যার জন্য এই চুরি এখন পর্যন্ত বন্ধ হচ্ছেনা। ১০, ২০, ৫০ হাজার টাকা চোরের জন্য কিছুই না। তাই বলছি, এক সাথে যদি ৫ লাখ, ১০ লাখ টাকা জরিমানা করে সরকার একটি ত্রাণ তহবিল গঠন করেন, তাহলে দূর্নীতিবাজ, চোরদের টাকা দিয়েই বর্তমানে দরিদ্র মানুষের সাহায্যে এগিয়ে আসা যেতো। চোররা করে দরিদ্রের আহার চুরি। আর সেই টাকা দিয়েই যদি সরকার দরিদ্রদের জন্য ফান্ড গঠন করেন, তাহলে দেশ উপকৃত হবে বলে আমার ধারণা। কারণ চুরি আর দূর্নীতি করে একচেটিয়া কোটিপতি হওয়ার প্রবনতা অনেকটাই হ্রাস পাবে বলে আমার বিশ্বাস। বিষয়টি ভেবে দেখার জন্য আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার নিকট আবেদন করছি।
আমার মনে হয় চোরকে ঠিক করার চাইতে, এই পদ্ধতি অনুসরণ করলে, দূর্নীতি অনেকটাই কমে আসবে বলে আমার বিশ্বাস। যদিও আপনি আমাদের চাইতে অনেক বেশি বুঝেন এবং জানেন। কারণ জেল জরিমানাযে যৎসামান্য, সেটা চোরেরা বুঝে এবং জানে, আর সম্মান সেটাতো তাদের নাই বললেই চলে। প্রিয়নেত্রী আপনার দ্বারাই এই পদ্ধতি চালু করা সম্ভব। কারণ আপনার হারাবার কিছুই নেই। তারপরও দেশের অসহায়, বঞ্চিত মানুষগুলো যেন দূর্নীতিবাজ কোটিপতিদের আধিপত্য আর পিড়ন থেকে মুক্তি পায়, এই আশা করি। আপনার দীর্ঘায়ু ও সুস্বাস্থ্য কায়মনোবাক্যে প্রার্থনা করি। আল্লাহ আপনার সহায় হোন।
লেখক: জেলা পরিষদ সদস্য, কুমিল্লা।