আবু পলাশ মো. সফি উল্লা:
এই করোনা শেষ হবে না, এই করোনা চলতেই থাকবে। পুর্বের মহামারীগুলো প্রতিষেধক এবং প্রতিরোধক (ভ্যাক্সিন) আবিষ্কার হয়ে সর্বত্র ছড়ানোর পূর্ব পর্যন্ত তান্ডব চালিয়েছে। এই করোনারও একই অবস্থা থাকবে। চীন সবকিছু জানার পরেও এই পাঁচমাসে সবকিছু এমন লকডাউন করেও এর সংক্রমণ বন্ধ করতে পারে নাই, তবে নিয়ন্ত্রণে তুলনামূলকভাবে সফল। এখনো যেকোনো মূহুর্তে আবার বিস্ফোরণ ঘটতে পারে। কেননা উপযুক্ত ভ্যাক্সিন প্রয়োগ না হলে প্রাণির অবাধ বিচরণে এই ভাইরাস সংক্রমিত হবেই। …. আপনি চিন্তা করছেন এখনকার কথা, কিন্তু বিভিন্ন শিল্প, মন্ত্রণালয় এবং গার্মেন্টস ফ্যাক্টরীগুলো চিন্তা করছে ছয়মাস/একবছর পরের কথা। শপিংমল এবং বস্ত্রালয়গুলো এই এক রমজানের লাভের আশায় সারাবছর মোটামুটিভাবে কাটিয়ে উঠে। এখন যদি বন্ধ রাখতে হয় তাদের কি অবস্থা হবে? আমাদের অর্থনীতির প্রায় ৭০+ শতাংশ এই আরএমজি’র উপর নির্ভরশীল। চলমান পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে, আদৌ বছর দুয়েকেও সম্ভব কি না ? মনে করুন, ছয় মাস পরও উপযুক্ত ভ্যাক্সিন সর্বত্র পৌছালো না, তখন কি করবেন? এতদিনে একমুখী নির্ভর অর্থনীতি বাঁচবেতো? এভাবেও চলতে থাকলে মোটামুটি এক/দেড় বছর টিকে থাকার মত অর্থনীতি আমাদের রয়েছে। কিন্তু, আরএমজি বন্ধ/স্থির রেখে ৩ মাসও টিকবে না আমাদের অর্থনীতি।
আমার দৃষ্টিকোণ থেকে শপিংসেন্টার কিংবা বস্ত্রালয়গুলো সাময়িক খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেয়াটা সমীচীন। অন্যদিকে আপনাকে/আমাকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে। এখন এটা একটা প্রাকৃতিক দূর্যোগের মতই, নিজের অবস্থান থেকে নিজের নিরাপত্তার জন্য যা করার দরকার তাই করুন। যতজন ফেসবুকার সিদ্ধান্তের প্রতি অপারগ, তারা অযথা শপিংমল/মার্কেটে না গেলেই হলো। আগে যে কাজটি পরিবারের ৩ জন গিয়ে ৫ দোকান দেখে যাচাই করে কেনাকাটা করতেন এবার ১জনই ২/১ টা দোকান দেখেই কাজটা সারুন। চলমান পরিস্থিতি নিয়ে সরকার এবং তদসংশ্লিষ্টের উদ্ভট সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ আমিও করেছি। কিন্তু এই সিদ্ধান্তটি মোটেই উদ্ভট না। যারা বাংলাদেশের অর্থনীতি কিঞ্চিৎও বুঝেন তারা এই সিদ্ধান্তে অবাক হবে না। অর্থনীতির অবস্থা পুরোই নড়বড়ে/নাজুক/ভঙ্গুর হলে, ছয় মাস পরও যদি এর প্রতিষেধক/ভ্যাক্সিন বের হয়, আপনার/আমার তা কেনার সামর্থ্য থাকবেতো? তাই, আমাদের উচিত সর্বত্র সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে যত্রতত্র জরুরী প্রয়োজন বিনা গমন/প্রস্থান করে যতটা কম সংক্রমিত হওয়া যায় এবং পাশাপাশি ভ্যাক্সিন বের হলে যেনো সহজে পেতে পারি সেজন্য সামগ্রিক অর্থনীতি সম্ভবপর টিকিয়ে রাখা।
লেখক: সাবেক সহ-সভাপতি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ।