ফারুক আল শারাহ:
কুমিল্লার লাকসামে দুই পরিবারের মা-মেয়েসহ নতুন ছয়জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। বৃহস্পতিবার জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে ২১টি নমুনার রিপোর্ট আসে। তাদের মধ্যে ৬ জনের রিপোর্ট পজিটিভ এবং অন্যদের নেগেটিভ। এ নিয়ে উপজেলায় আক্রান্তের সংখ্যা অর্ধশতকের ঘরে (৫০ জনে) পৌঁছলো। উপজেলা স্বাস্থ্যবিভাগের করোনা র্যাপিড রেসপন্স টিম সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
লাকসাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার (রোগ নিয়ন্ত্রণ) ও করোনা র্যাপিড রেসপন্স টিমের অন্যতম সদস্য ডা. মেহেদী হাসান জিতু জানান, উপজেলায় এ পর্যন্ত ৫০৬ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। তাদের মধ্যে রিপোর্ট এসেছে ৪২৭টি। আজ নতুন ছয়জন সহ সর্বমোট ৫০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। বাকী ৩৭৭টি রিপোর্ট নেগেটিভ। এখনো রিপোর্ট প্রক্রিয়াধীন রয়েছে ৭৯টি। বৃহস্পতিবার এখানে করোনায় আক্রান্ত হয়ে হেদায়েত উল্লাহ নামক এক ব্যক্তি মারা গেছেন। উপসর্গ নিয়ে শংকর চন্দ্র সরকার (৬৫) নামক এক বৃদ্ধ মারা গেলেও তার রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। আক্রান্তদের মধ্যে ইতোমধ্যে ১৩ জন সুস্থ হয়েছেন। করোনা র্যাপিড রেসপন্স টিম আক্রান্ত সকলের নিয়মিত খোঁজ-খবর নেয়ার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছে। কারও স্বাস্থ্যের অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার (২৮ মে) পৌরশহরের পশ্চিমগাঁও এলাকার মা ও দুই মেয়ের করোনা পজিটিভের রিপোর্ট আসে। তারা পরিবারের ৬৪ বছর বয়সী গৃহকর্তার (হাসপাতাল এলাকার ফার্মেসী মালিক) সংস্পর্শে আক্রান্ত হয়েছেন বলে ধারণা করা যাচ্ছে। সোমবার (২৫ মে) ওই ব্যক্তির রিপোর্ট পজিটিভ আসে। এ নিয়ে ওই পরিবারে চারজন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে মায়ের বয়স ৫৪ বছর, বড় মেয়ের বয়স ২৪ বছর এবং ছোট মেয়ের বয়স ২২ বছর। অন্য তিনজন আক্রান্তের মধ্যে পৌরশহরের উত্তরকুল এলাকার ৪০ বছর বয়সী মা এবং ২০ বছর বয়সী মেয়ে রয়েছেন। তারা বৃহস্পতিবার (২০ মে) করোনায় আক্রান্ত শহরের প্রাইভেট হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটার (ওটি) ইনচার্জ ২৩ বছর বয়সী যুবকের মা ও বোন। শনিবার (২৩ মে) ওই যুবকের সংস্পর্শে ২০ বছর বয়সী স্ত্রী ও ১৬ বছর বয়সী ছোট ভাইও করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। এ নিয়ে তাদের পরিবারের পাঁচজন করোনায় আক্রান্ত হলো। বাকী একজন শহরের পেয়ারপুর গ্রামের ৩০ বছর বয়সী এক গৃহবধূ। নতুন আক্রান্ত ছয়জনের বাড়ি লকডাউন করে তাদের হোম আইসলোশনে নিয়ে চিকিৎসা শুরু করেছে করোনা র্যাপিড রেসপন্স টিম।
লাকসাম উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আবদুল আলী বলেন, উপজেলায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বেড়ে চলেছে। করোনা সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে হলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিকল্প নেই। কারো শরীরে করোনা উপসর্গ দেখা দিলে তাৎক্ষনিক র্যাপিড রেসপন্স টিমকে অবহিত করুন। আপনাদের স্বাস্থ্যসেবায় আমাদের টিম সর্বদা তৎপর রয়েছে।