ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ আঘাত হানছে সন্ধ্যাতেই- এমন মাইকিং করা হচ্ছে দেশের উপকূলীয় জেলাগুলোতে। এছাড়া মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরে জারি করা হয়েছে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত। সতর্কতা সংকেত জারি করায় ও ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব বাড়তে থাকায় দেশের উপকূলীয় বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে আসতে শুরু করেছে মানুষ।
ইতোমধ্যেই উপকূলীয় জেলার সব সরকারি কর্মকর্তার ছুটি বাতিল করা হয়েছে। মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলার এবং বলগেট, ড্রেজার ইত্যাদি ছোট নৌযানকে নিরাপদে সরিয়ে আনা হয়েছে। জনসাধারণকে সতর্ক করতে বিভিন্ন চরাঞ্চলে মাইকিং করা হচ্ছে।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ উপকূলের কাছাকাছি খুলনা জেলা ও সুন্দরবনের দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে চলে এসেছে ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’। এটি আজ সন্ধ্যা নাগাদ বাংলাদেশের খুলনা জেলার দক্ষিণাংশের সুন্দরবনে ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উপকূলে আঘাত হানতে পারে। তবে এর আগে থেকেই প্রচণ্ড ঝড়, ভারী বৃষ্টি ও জলোচ্ছ্বাস আঘাত হানছে।
এদিকে পটুয়াখালীর ঝুঁকিপূর্ণ অনেক এলাকায় আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত থাকলেও আসছিল না মানুষ। পরে পুলিশের মাইকিং ও কড়া নির্দের্শে আশ্রয়কেন্দ্রে রওনা দেয় ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মানুষজন।
বিভিন্ন এলাকায় জনপ্রতিনিধিরা ঝুঁকিপূর্ণ মানুষজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসতে কাজ করছেন। শিশু ও বৃদ্ধদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে স্বেচ্ছাসেবকরা আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাচ্ছেন।
উপকূলীয় জেলাগুলোতে ঘূর্ণিঝড়ের আগেই মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। এছাড়া স্থানীয় স্কাউট, রেডক্রিসেন্ট, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্যদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি), রেডক্রিসেন্টসহ বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের স্বেচ্ছাসেবকরা মাইকিং করছেন। পাশাপাশি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, ফায়ার সার্ভিস, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও রোভার স্কাউটের সদস্যরাও উপকূলের বাসিন্দাদের নিরাপদে আশ্রয় যাওয়ার জন্য তাগাদা দিচ্ছেন।
আবহাওয়ার বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় ও মুন ফেজের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫-৭ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
শনিবারের জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা পরিবর্তন করে জেএসসির পরীক্ষা ১২ নভেম্বর ও জেডিসির পরীক্ষা ১৪ নভেম্বর নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এছাড়া ১১ নভেম্বরের (সোমবার) জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষাও স্থগিত করা হয়েছে।